কিছুটা হলেও বিশ্বাস ফিরিয়ে দিল হাইকোর্ট

নির্মল দত্ত

এই সরকারের মন্ত্রীরা কথায় কথায় বলে থাকেন, আইন আইনের পথে চলবে। কিন্তু আইনকে না মানার ব্যাপারে এই সরকারের যা রেকর্ড, তা অন্যান্য সব রাজ্যকেই পেছনে ফেলে দিয়েছে। মুখে বলেন, আদালতের রায় মান্য করি। কিন্তু কার্যত আদালতের প্রতি সেই শ্রদ্ধা দেখা যায় না। কীভাবে আদালতের রায়কে ছোট করব, সেই চেষ্টাতেই যেন সরকার বেশি ব্যস্ত।

পুজো নিয়ে আদালতের রায়ের কথাই ধরা যাক। হাইকোর্ট দু পক্ষের মন্তব্য শুনে একটা যুক্তি সঙ্গত রায় দিয়েছে। মণ্ডপে ভিড় করা চলবে না। এবছর সতর্কভাবে পুজো করতে হবে। যতটা সম্ভব, সতর্ক থাকতে হবে।

high court

যে কোনও যুক্তিবাদী লোকের কাছেই রায়টা গ্রহণযোগ্য মনে হবে। কিন্তু রাজ্য সরকার বরাবরই উল্টো রাস্তায় হাঁটায় বিশ্বাসী। আদালতের এই রায়কে খোলা মনে স্বাগত জানানো তো দূরে থাক, পরের দিনই পাল্টা ডিভিশন বেঞ্চে যাওয়ার কথা শোনা গেল। পুজো সমন্বয় কমিটির ব্যানারে পাল্টা আদালতে যাওয়াও হল। পুজো সমন্বয়ের মাথা কারা?‌ তাঁরা প্রায় সবাই তৃণমূলের পরিচিত মুখ। মোদ্দা কথা, সরকার চাইছে, আদালতে এই রায় যেন খারিজ হয়ে যায়। তাই এগিয়ে দেওয়া হল পেটোয়া ক্লাবগুলিকে। তাঁদের হয়ে আইনি লড়াই কে লড়তে এলেন?‌ তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। নেত্রীর নির্দেশ ছাড়া তিনি এই মামলা হাতে নিলেন!‌

ধন্যবাদ বিচারপতিদের। তাঁরা নিজেদের রায়ে অটল রইলেন। হাইকোর্টের মর্যাদা কিছুটা হলেও রক্ষা করলেন। একের পর এক প্রতিষ্ঠানকে কার্যত রাবার স্ট্যাম্প বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কখনও কখনও হাইকোর্টের ভূমিকা অনেক প্রশ্ন তুলে দিয়ে যায়। মনে হয়, বিচারকদের অনেকেই যেন সরকারকে তুষ্ট করতে ব্যস্ত। অন্তত বেশ কিছু রায়ে নিরপেক্ষতার ছোঁয়াটুকুও থাকে না। কিন্তু এই রায় কিছুটা হলেও বিশ্বাস ফিরিয়ে দিল।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.