নতুন বছরে খবরের পাশাপাশি থাকছে সাহিত্য। বেঙ্গল টাইমসের দপ্তরে আসা বেশ কয়েকটি কবিতা প্রকাশ করা হল। প্রতি সপ্তাহেই এমন একগুচ্ছ কবিতা প্রকাশিত হবে। যাঁরা কবিতা ভালবাসেন, পড়ুন।
একটু ঘুমোবো
মৃত্তিকা মুখার্জী চট্টোপাধ্যায়
মাঝরাত থেকে
চাঁদটার অধীশ্বর হয়ে গেছ তুমি।
কখন পূর্ণিমা আর কৃষ্ণপক্ষ কখন-
সব এখন তোমার ইচ্ছেমতো,
এবার আমি নিশ্চিন্তে ঘুমোবো।
কাল থেকে নদীটাও
মেনেছে বশ্যতা।
কখন ভাঁটা আর উজান কখন-
সবই হবে তোমার চাহিদামতো,
আজ একটু নিশ্চিন্তে ঘুমোবো।
একদিন সবটুকু পৃথিবী আমার
হয়ে যাবে তোমার খেয়ালখুশী,
সেইদিন ঝড়,বৃষ্টি,রামধনু-সব
তোমার দু’হাতে তুলে দিয়ে
আমি শীতঘুমে চলে যাবো॥
****
প্রশ্ন
বিদ্যুৎ ঘোষ
রাত গভীর এখন,
বুকের মধ্যে চলকে ওঠা রক্ত
গলার কাছে আটকে থাকা নৈঃশব্দ,
কাল ভোরের সূর্যের প্রত্যাশায়।
সূর্যও ঢাকা পড়ে পাপের গ্লানিতে।
ঝড় ওঠে ঝড় থামে…
প্রশ্রয় দেয় না আকাশ।
বুকে তার কলঙ্কের মেঘ..
আহুতি দিয়েছে কবে
খোঁজ নেই আত্মার।
আত্মবলিদান নাকি আত্মহত্যা ?।
***
প্রহসন
নিসর্গ নির্যাস
প্রতিনিয়ত এখন
প্রহসন করছে অক্ষরগুলো
থমকে যাচ্ছে আঙ্গুল
লিখতে গিয়েও
নিস্তব্ধতা
নিশ্চুপ
‘ব্ল্যাক আউট’
***
কবিতা
অর্থ
রিয়াজুল আলম ভূঁইয়া
এইভাবে বেঁচে থাকার আসলে কোনও মানে নাই
তবু বেঁচে থাকা চাই-কারণ কে যেন
বলে ওঠে, অন্য একটা বাঁচা আছে অন্য কোথাও।
যদিও সেখানে যাই নাই কোনওদিন
কেউ কেউ গেছে বলে কানাকানি শুনি।
এইসব কথা যারা কানাকানি করে
তাদের আড্ডায় কৌতূহলে ঢুকে পড়ি,
কারো কারো চোখমুখে তাচ্ছিল্য দেখি
আমাদের জীবনের প্রতি, অন্যরকম আলো
তাদের বলনে চলনে লেগে আছে মনে হয়।
অত্যন্ত সতর্ক হয়ে তাদের পিছু পিছু
ঝানু গোয়েন্দার মতন গিয়ে দেখি
তাহারাও একা হলে কাঁদে আর কাঁদে
যারা যত বেশি কাঁদে তাদের আলো তত বেশি
ঠিকরায়, আড্ডায় অন্ধকারে জ্বলজ্বল করে।
বুঝলাম কান্না শেখা প্রয়োজন জীবনে
অন্তত তাহলে যেইসব বৃথা মুহূর্ত যায়
সেইসব ক্ষণে চক্ষুর উপর থেকে সরে যাবে ধূলো।
হয়তো পরিষ্কার চোখে দেখতে পেতেও পারি
সংগীতের মতন সত্য সুন্দর সার্থক দিনগুলো।
***
অক্সিজেন
সুজন বিশ্বাস
কথায় কথায় গড়িয়ে যেত রাত
দূরত্ব সে যতই লম্বা হোক
বিচ্ছিন্নতা কোথায় উড়ে যেত
উড়ে যেত যত রাজ্যের শোক।
প্রেম ছিল না, যেমন সবার থাকে
না উত্তম, না সুচিত্রা সেন
কোন নামে ডাকব এবার তোকে
নাম দিলাম প্রিয় অক্সিজেন।
সময় চলে যেমন চলে নদী
গড়িয়ে যায় বছর আর মাস
কাছে থেকেও অনেক দূরে তুই
স্মৃতি আছে, আছে দীর্ঘশ্বাস।।