‌শুরুতেই প্রশ্নের মুখে কলকাতার ‘‌জে’‌ লিগ

কুণাল দাশগুপ্ত

কলকাতায় স্পেনের গৃহযুদ্ধের দিন তিনেক আগে থেকেই ফুটবলের মক্কা আলোড়িত, উদ্বেলিত। ভারতের ‘‌জে লিগ’ এ এটাই প্রথম ডার্বি। জে লিগ শুনে অনেকে ভিরমি খেতে পারেন। এটা আবার কবে চালু হল!‌ আসলে, আই এফ এ–‌র নতুন সচিব জয়দীপ মুখার্জির নামের আদ্যক্ষর ‘‌জে’‌। তিনি সচিব হওয়ার পর এটাই প্রথম ডার্বি। তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে অতি উৎসাহে ‘‌জে লিগ’‌ বলতে শুরু করেছেন।

জে লিগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার পারদ যেভাবে রকেটের গতিতে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে, তা দেখে ইসরোর বিজ্ঞানীরাও থ হয়ে যেতে পারেন। চন্দ্রযান ছেড়ে এদিকেই মন দিতে পারেন। নয়া সচিবেরও পুলকিত হওয়ারই কথা। যুবভারতী ভরে গেলে আই এফ এ–‌র সিন্দুক স্ফীত হবে। আই এফ এ–‌র অনটন জনিত ভীতিও কাটবে বৈকি।

derby3

কলকাতাকে বদলে দিতে চাইছেন সচিব। এখন তো সবই ডিজিটাল। তাই অনলাইনে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা করেছেন। ফলে, কাউন্টারের সামনে চিরাচরিত সেই সর্পিল লাইন দুর্লভ হয়ে গেছে। ঘোড়াপুলিশের সেই ছুটে আসাও দেখা যায় না। ফুটবল যুবভারতীতে নির্বাসিত হওয়ার পর এমন অনেক ছবিই বদলে গেছে। অনলাইনে দেওয়া নিঃসন্দে ভাল উদ্যোগ। কিন্তু আই এস এল আর কলকাতা লিগের চরিত্রে অনেক ফারাক আছে। এখানে রোদে পুড়ে, জলে ভিজে খেলা দেখা লোকের সংখ্যাই বেশি। অনলাইনের বাইরেও হাজারো মানুষ রয়েছেন, যাদের সঙ্গে কম্পিউটারের সখ্যতা এখনও তেমন একটা গড়ে ওঠেনি। তাঁরা হয়ত টিকিটের মুখ দেখতে পাবেন না। বা অন্যের দ্বারস্থ হতে হবে। অনলাইন পারদর্শীদের থেকে তাঁদের আবেগ কিন্তু কোনও অংশেই কম নয়। আবেগ তো আবেগই। তার তো আর ডিজিটাল হয় না। ম্যাচের ফল যাই হোক, টিকিট না পাওয়া দর্শকরা কিন্তু ম্যাচের আগেই হেরে বসে আছেন, আই এফ এ–‌র কাছে। অনলাইনে আবার যদি কেউ একাধিক টিকিট তুলে ফেলেন, তাহলে আই এফ এ–‌র পুলকিত, আলোকিত মুখ কালো হয়ে যেতে পারে। কারণ, আনন্দের ভরা বাজারে কালোবাজারির সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।

জে লিগে এবার আরও একটা বিষয় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বহু ওয়েব পোর্টালকে মিডিয়া কার্ড না দেওয়ায় তাদের সাংবাদিকদের এবার মাঠের বাইরেই থাকতে হবে। সারা বিশ্বজুড়ে ফুটবলকে অনলাইনে প্রোমোট করার চেষ্টা চলছে। সেখানে আই এফ এ হাঁটছে উল্টো রাস্তায়। মুহূর্তে যখন সারা বিশ্বে খবর ছড়িয়ে যাচ্ছে, তখন সেই পরেরদিন সকালে কাগজে বেরোবে, তার ভরসায় আই এফ এ বসে থাকছে। একদিকে, ডিজিটাল যুগের জয়ধ্বনি চলছে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সেই পেছনের দিকে হাঁটা দেওয়া। নয়া সচিব কেন এদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বানালেন, তা তিনিই জানেন। এতদিন জানা ছিল, আই এফ এ সবার । এখন কারও কারও। তবু জে লিগের জয়গান বন্ধ করে দিলে বিপদ বাড়বে। সচিবের রোষ মহারোষ। ‌

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.