বাসু মুখোপাধ্যায়
চিঠি এসেছিল নীল খামে। অনেকদিন আগে।
চিঠিতে প্রেরকের নাম ছিল না। হয়তো অফিসে বেরনোর সময় এসেছিল। পরে পড়ব ভেবেছিলাম। আর পড়া হয়নি। পড়েছিল ড্রয়ারের এক কোণে খাম বন্ধ অবস্থায়।
.
রবিবার।
ড্রয়ারটা বহুকাল পরিষ্কার করা হয়নি। আজ ভাবলাম করে নিই।
ড্রয়ারের একবারে একপাশে কোণঠাসা হয়ে পড়ে থাকা সেই খাম দেখতে পেলাম।
খুলে ফেললাম। হাতের লেখাটা বেশ চেনাচেনা লাগল।
.
মান্যবরেষু,
শুনলাম আপনার নাকি আমাকে পছন্দ হয়েছে। পাকা কথাও দিয়ে দিয়েছেন। বিয়ে যদি আমাকে করতেই চান তাহলে কটা কথা জেনে রাখুন।
আমার প্রচণ্ড রাগ। রেগে গেলে আমি ভয়ংকর হয়ে যাই। জিনিসপত্র ভাঙি। তাই আমার অপছন্দের কোনও কাজ, যাতে আমি রেগে যাই, এমন কিছু করবেন না কখনও।
বিয়ে করলে সংসারের প্রতিটা ব্যাপারে আমি যা বলব তাই হবে। আপনি কোনও আপত্তি করতে পারবেন না।
এরপরেও যদি বিয়ে করতে চান তাহলে বুঝব আমার শর্ত মেনেই রাজি হয়েছেন।
শুভেচ্ছান্তে
…………….
.
ইস্ কেন খুলিনি তখন এই খাম! কেন পড়িনি এই চিঠি! তাহলে আজ…
.
ঠিক এই সময় আমার বউয়ের তীক্ষ্ণ চিৎকারে শুধু আমিই নয় এ বাড়ির সমস্ত মাকড়সা, আরশোলা, টিকটিকি, ডেঙ্গির মশা এডিস ইজিপ্টাই পর্যন্ত কেঁপে উঠল।
— “ওয়াশিং মেশিন থেকে জামা- কাপড়গুলো বের করে ছাদে মেলে দিয়ে এসো। মনে করে ক্লিপ লাগিও। সেদিনের মতো কোরো না, আমার ব্লাউজটা হাওয়ায় উড়ে পড়ে গেল আর বিড়ালে তার ওপর পটি করে দিয়ে চলে গেল। অতো ভাল ব্লাউজটা ফেলে দিতে হলো। আজ যেন এমন না হয় বলে দিলাম..”
.
আমি স্তব্ধ হয়ে কয়েক সেকেন্ড চিঠিটার দিকে তাকিয়ে রইলাম, তারপরেই দৌড়ালাম বউয়ের হুকুম তামিল করতে…