শান্তনু দাম
অনেকদিন ধরেই চাপা একটা বিতর্ক চলছে সুশান্ত ঘোষকে ঘিরে। তাঁকে নাকি জেলা কমিটি শোকজ করেছে। আবার সরকারিভাবে সেকথা জানানো হচ্ছে না। কেউ বলছেন, তাঁকে সাসপেন্ড করা হবে। কেউ বলছেন, এটা বহিষ্কারের পূর্ব প্রস্তুতি।
কোনও সন্দেহ নেই, সুশান্ত ঘোষ একজন জনপ্রিয় নেতা। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তাঁর জনপ্রিয়তা রয়েছে। তাঁর সভা আছে শুনলেই দূরদূরান্ত থেকেও মানুষ ছুটে আসেন। বামেরা ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পরেও তাঁর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি। সবথেকে বড় কথা, এই আট বছরে শাসক দল এখনও তাকে রীতিমতো ভয় পায়। তাঁর উপস্থিতিকে ভয় পায় বলেই নানা বাহানায় তাঁকে জেলায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
রাজ্যে পালাবদলের পর তাঁকে জেলে পাঠানো হয়েছিল। একের পর এক মিথ্যে মামলা দেওয়া হয়েছিল। তাতেও দমানো যায়নি। সুশান্তবাবু নিজের মতো করেই লড়াই করে গেছেন। দলে হয়ত কিছুটা ব্রাত্য। তবু ডাক পেলেই দূরদূরান্তে ছুটে গেছেন। একজন বাম মনষ্ক যুবক হিসেবে আমার মনে হয়েছে, সুশান্ত ঘোষকে ঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়নি। এই কঠিন সময়ে তাঁকে আরও বেশি করে বিভিন্ন জেলায় পাঠানো যেত। এতে বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা আরও বেশি উৎসাহ ও মনের জোর পেতেন।
কোন একটা পোর্টালে দু একটা মান অভিমানের কথা বলেছেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির কথা ভাবা হচ্ছে! আমার মনে হয়, এই বিতর্ক বা এই পরিস্থিতি এড়ানো যেত। অহেতুক বিষয়টা জেলা কমিটির চর্চায় না এনে রাজ্য সম্পাদক নিজে তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারতেন। তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থাকলে সরাসরি তাঁকেই বলা যেত। বিশেষ পরামর্শ বা নির্দেশ দেওয়া যেত। তিনিও নিজের মান–অভিমানের কথা প্রাণ খুলে দলের রাজ্য সম্পাদককে বলতে পারতেন। মুখোমুখি একান্ত আলোচনায় অনেক বিতর্কই মিটে যেতে পারত।
কিন্তু তা না করে অহেতুক জটিলতা তৈরি করা হচ্ছে। এতে সমস্যা কমবে না। বরং, আরও বাড়বে। এই কঠিন সময়ে সুশান্ত ঘোষের মতো একজন সাসহী ও লড়াকু নেতাকে বিপক্ষ শিবিরে পাঠিয়ে দেওয়া কোনও বিচক্ষণতার কাজ নয়। আশা করি, রাজ্য নেতৃত্ব সেই হঠকারী কাজ থেকে বিরত থাকবেন। এখনও সময় আছে। অতীতে অনেক ভুল হয়েছে। আরও একটা নতুন ভুল নাই বা করলেন!
*****