এই ললিপপে তিনি ভুলছেন না

বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন:‌ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের প্রার্থী কে?‌ শুরুতে ভাসিয়ে দেওয়া হল শরদ পাওয়ারের নাম। তিনি যে রাজি হবেন না, জানাই ছিল। এরপর তোলা হল ফারুক আব্দুল্লা, গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর নাম। জয়ের আশা নেই বুঝে এই দুজনও সরে দাঁড়াবেন, এটাও প্রত্যাশিতই ছিল। শেষমেশ রাজি করানো হল যশবন্ত সিনহাকে।

বিজেপির এই প্রাক্তন মন্ত্রী যথেষ্ট শিক্ষিত, বিচক্ষণ, অভিজ্ঞ–‌এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। প্রার্থী হিসেবে যোগ্যতার বিচারে তিনি দ্রৌপদী মুর্মুর থেকে ঢের এগিয়ে, তা নিয়েও সংশয় নেই। কিন্তু তাঁকে সামনে রেখে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোন বার্তা দিতে চাইলেন বিরোধীরা?‌ বিজেপির দর্শনের সঙ্গে তাঁর বিরোধ কোথায়?‌ বিভাজনের যে রাজনীতিতে বিজেপি অভ্যস্থ, সেই মতকেই সোচ্চারভাবে এতদিন বলে এসেছেন এই যশবন্ত।

তাহলে বিরোধটা কোথায়?‌ নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রবীণদের একে একে কোণঠাসা করার চেষ্টা হয়। প্রধানমন্ত্রীর বলয় থেকে বাদ পড়েন যশবন্ত। আদবানী, মুরলি মনোহর যোশিদের মতো তাঁকেও ব্রাত্য রাখা হয়। এই তো বিরোধের মূল কারণ। নিদেনপক্ষে রাজ্যপাল করে দিলেও দু’‌হাত তুলে মোদিকে ধন্য ধন্য করতেন। যেহেতু পুনর্বাসন হয়নি, তাই ক্ষুব্ধ।

হ্যাঁ, পুনর্বাসনের জন্যই এসেছিলেন তৃণমূল শিবিরে। আশা ছিল, তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠানো হবে। কিন্তু তা না করে করে দেওয়া হল দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি। এই পদের যে কোনও মূল্যই নেই, সেটা অভিজ্ঞ যশবন্ত বেশ ভাল করেই জানেন। শত্রুঘ্ন সিনহাকে এনে আসানসোলে প্রার্থী করা হল। তবু যশবন্তকে হল না। এটা নিশ্চয় ভালভাবে নেননি প্রবীণ এই নেতা। সেই কারণেই দীর্ঘদিন তৃণমূলের নানা কর্মসূচিতে সেভাবে সামিল হতে দেখা যায়নি।

এবার এই রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হয়েও তিনি খুব খুশি, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। এই বয়সে এসে কে নিজের মান সম্মান খোয়াতে চান?‌ হয়ত তাঁকে রাজ্যসভার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সেই কারণেই এবারের মতো হয়ত রাজি হয়ে গেলেন। কয়েকমাস পর মিলিয়ে নেবেন। আর এরপরও যদি টিকিট না মেলে, লিখে রাখুন, তৃণমূলের ত্রিসীমানাতেও তাঁকে দেখা যাবে না।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.