অনামিকা তেওয়ারী।
-আজ বিকেলটা ফাঁকা রেখেছো তো?
সুমন কম্পিউটার স্ক্রিনের ওপর থেকে মুখ তুলে আমার দিকে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে রইল। ভাবখানা এমন, যেন বুঝতেই পারছে না, কেন জিজ্ঞেস করছি। ফিরতি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে জানতে চাইলো,
– আজ বিকেলে কোথাও যাচ্ছি নাকি আমরা?
বুঝলাম, ভাব টাব নয়, ও সত্যিই বুঝতে পারে নি। আর কতো ঝগড়া, অভিমান করবো! এখন মনে হয় ওসব করা মানে নিজের সময় আর মন নষ্ট করা। তারচেয়ে বলেই দিলাম,
– সিটি মল, ভুলে গেলে? কেকা, রীতা ওরাও তো আসছে।
– ও হ্যাঁ, ফাঁকা আছে তো। সেদিন বলেছিলে না আজ যাবে, তাই আজ ফাঁকা রেখেছি বিকেলটা। দেখছো, নিজেই ভুলে গেছি কেমন!
এইরকম সময়ে জোড়া, তাপ্পি মেরে কথা বলাটা সুমনের নেচার। আমার গা সওয়া হয়ে গেছে।
নিজের জন্য একটা গোলাপি শাড়ি বেছে রেখেছি, আজ পরবো বলে। সুমন আবার ম্যাচিং করে পরা পছন্দ করে না। কেকা খুব করে বলেছে,” আজ অন্তত ম্যাচ করে পরে আয়”…। আমি বললে সুমন কখনই পরবে না। তাই বুদ্ধি করে ছেলেকে বললাম, যা না পাপাইকে বল পিংক আর হোয়াইট চেক শার্ট’টা পরতে। বলবি, এটা পরলে তোমাকে খুব কুল লাগে পাপাই।
আমার ছয় বছরের ছেলে এতো কিছু বোঝেনা, নাচতে নাচতে ওর পাপাই এর কাছে গিয়ে আমার শেখানো কথা গুলো তোতাপাখির মতো আউড়ে এলো। মনে মনে চাইলাম, আজ অন্তত ওই শার্ট’টা তুমি পরো সুমন।
পড়ন্ত বিকেলে রোদের তাপ অনেকটাই কম, দুপুরের গরম বাতাস এখন একটু একটু করে ঠান্ডা হচ্ছে। দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিলাম। ফুরফুরে বাতাস এসে তাজা করে দিলো কিছু পুরোনো স্মৃতি। সুমনের প্রিয় জায়গা ছিল এটা, এখানে বসেই ও আর.ডি. বর্মনের গান শুনতো। আমি শুয়ে থাকলে, জোর করে টেনে তুলে বলতো, ” আরে কি শুয়ে আছো এখনও! এই বাতাসটা এখনও ফ্রেশ, একটু পরেই বল্টুদের গ্যারেজ থেকে গাড়ির ধোঁয়া এসে মিশবে। ওঠো ওঠো। ” বল্টুদের গ্যারেজটা এখন আর নেই, বড় দোকান হয়ে উঠে গেছে মার্কেটের দিকে। তাই শুদ্ধ বাতাসই আসে এখন। তবে সুমনের সেই শখটা এখন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে। সময়ের সাথে বয়স, বয়সের সাথে কাজের চাপ আর কাজের চাপের সাথে তাল মিলিয়ে মানুষটাও কেমন যেন বদলে যাচ্ছে!
– কি হলো জানলা খুলে দাঁড়িয়ে আছো যে, এখনও রেডি হওনি?
সুমনের গলা পেয়ে চমকে উঠি। যাক ওই শার্ট’টাই পরেছে ও। আমি চুল বেঁধে, মেক আপ করে হাফ রেডি হয়েই ছিলাম। শাড়িটা পরিনি, ভেবেছিলাম যদি সুমন অন্য শার্ট পরে তাহলে তার সাথে ম্যাচিং করে অন্য শাড়ি পড়বো। খুব আনন্দ পেলাম মনে মনে। ওকে কথায় ব্যস্ত রেখে আলমারি থেকে পিংক শাড়িটা বার করে পরে নিলাম। এখন আর ততটা খেয়াল রাখে না সুমন, আমার শাড়ির রঙ দেখতে ওর বয়েই গেছে!
সময়মতো সিটি মলের কাছে পৌঁছেছি আমরা। রীতা দূর থেকে দেখতে পেয়ে হাত নাড়লো। একটা নীল রঙের ড্রেস পরে এসেছে রীতা, ওর হাজব্যান্ড অমিতদাও নীল পোশাকে। সুমন হেসে বলে,
– কেমন ম্যাচিং করে পরেছে দ্যাখো দুজনে!
আমি ঠোঁট চেপে হাসি। দুটো রঙের চেক শার্ট’টা বলে সুমন এখনও ধরতে পারেনি যে আমিও ওর সাথে ম্যাচিং করেই পরে এসেছি। কেকাও এসে পড়লো খানিক বাদেই। আমার দুই বান্ধবী খুব সমঝদার। ভুলেও সুমনকে টের পেতে দেয় না এই ম্যাচিং এর ব্যাপারটা। বর গুলোকেও মনে হয় শিখিয়ে পড়িয়ে এনেছে। লজ্জাও লাগছে আমার, না জানি কি ভাবছে এখন ওরা! আমাকে দেখে ওদের করুণা হচ্ছে না তো! হলেই বা কি করবো। আমার অবস্থা এখন অনেকটা, কে কি ভাবলো তাতে কিচ্ছু যায় আসে না, কাজটা হলেই হলো টাইপের। বাচ্চাদের ফান গেমসে ব্যস্ত করে আমরা নিজেদের মতো করে ঘোরাঘুরি করছিলাম। বারবার ঘড়ি দেখছি, শো টা এখনও শুরু হয়না কেন!
হঠাৎ জোরে জোরে অ্যানাউন্সমেন্ট শুরু হলো, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা এই “ম্যাড ফর ইচ আদার” কাপল শো’টি শুরু করতে চলেছি। আগ্রহীরা চটপট আমাদের মঞ্চের সামনে চলে আসুন।
রীতা এইসব খবরগুলো বেশ জোগাড় করে নেয়। ও-ই তো আমাদের জানিয়েছিল টিভি টেন চ্যানেল আজ এই মলে একটা কাপল শো অরগানাইজ করছে। সুমন জানতে পারলে আগেই “না” বলে দিতো। তাই আমিও প্রথমে না-ই বলেছিলাম। কিন্তু রীতা ছাড়বার পাত্রী নয়, বলেছিল ” একবার ট্রাই করে দ্যাখ্ না। শুনেছি এই শো গুলোতে খুব মজার মজার রাউন্ড থাকে। তোর বরটা একটু যদি খুঁজে পায় নিজেকে। ”
লোভে পড়ে হ্যাঁ করে দিলাম। সুমনকে আবার একবার নতুন করে পেতে ইচ্ছে করে খুব, তাই ভাবলাম দেখাই যাক চেষ্টা করে।
সুমন যখন জানতে পারলো এই শো’য়ে আমরা অংশগ্রহণ করছি, ও একটু বিরক্ত হলো। আমাকে আড়ালে ডেকে বললো,
– কিসব বাচ্চাদের মতো বায়না করো তুমি! এসব করার সময় আছে আর, এগুলো ওই উঠতি বয়সের কাপলরা করে।
আমি কিছু বলার আগেই কেকা দৌড়ে এসে সুমনকে বললো,
– আড়ালে, আবডালে আজ কোনও কথা হবেনা সুমন। যা বলার চলো ওই স্টেজে গিয়ে বলি। কাম অন, আমার হাজব্যান্ড তোমার থেকে দু-তিন বছরের বড়ো। ও যখন যাচ্ছে, তুমি কেন নয়!
সুমন আর জেদ দেখাতে পারলোনা। এমনিতে বাইরের লোকজনের কাছে ও খুব পোলাইট। যতো জেদ আমাকেই দেখাতে হয় ওকে!
আমাদের বাচ্চাদের সে কি উৎসাহ। বিশেষ করে আমারটি তো আনন্দে লাফিয়েই চলেছে, বাবা মা’কে এই প্রথম একসাথে স্টেজে দেখছে ও। প্রথম কয়েকটি রাউন্ডে ভালোই ফল করলাম আমরা। একটা রাউন্ডে তো আমার পিঠে ঝুড়ি বেঁধে দিয়ে সুমনকে বল থ্রো করতে বলা হলো। যে যার বউয়ের পিঠে বাঁধা ঝুড়িতে যত বেশি বল ঢোকাবে সেই জিতবে। সুমন খুব ভালো ফিল্ডিং করতো একসময়। কেকা সেটা জানতো বলেই বলে উঠলো, ” হয়ে গেলো, এখানে তো সুমনই জিতবে। ” কেকার ভবিষদ্বাণীই সত্যি হলো। ওই রাউন্ডে আমি আর সুমন সবচেয়ে বেশি স্কোর করে ফাইনালে উঠলাম। দিগ্বিদিক জ্ঞান শূন্য হয়ে আমি সুমনকে আনন্দে জড়িয়ে ধরে ফেললাম। ওর জন্যই তো এই রাউন্ডে আমরা জিতলাম। আশ্চর্যের বিষয় হলো, সুমন একটুও আপত্তি করলো না! উল্টে দুই হাতে চেপে ধরলো আমার পিঠ। প্রাণ ভরে অনুভব করলাম, ওর হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন। শেষ কবে পেয়েছি, মনে নেই!
কেকারা ছিটকে গেল প্রতিযোগিতা থেকে। অথচ ওর উৎসাহটাই বেশি ছিল, খারাপ লাগলো ঠিকই কিন্তু এই মুহূর্তে আমার মনে হচ্ছে আজ হয়তো শেষ হাসি আমরাই হাসবো। সবকটা বল ঝুড়িতে ঢুকেছে, আমাদের স্কোর অনেকটাই বেশি। রীতা আর ওর হাজব্যান্ড, সেইসাথে আর একজোড়া দম্পতির সাথে শুরু হলো আমাদের ফাইনাল রাউন্ড। সুমন আমার হাতটা হঠাৎ করে চেপে ধরেছে। টের পেলাম ওর হাতের তালুতে ঘাম জমছে। ওর মুখের দিকে তাকালাম, খুব মন দিয়ে সঞ্চালকের ঘোষণা শুনছে। যেন এক ঝলক দখিনা বাতাস বল্টুদের পুরোনো গ্যারেজের পাশ দিয়ে, আমাদের ঘরের ওই জানলা হয়ে এসে ছুঁয়ে গ্যালো আমাকে! আমি কেকার দিকে তাকালাম, ও চেঁচিয়ে বললো, ” অল দ্যা বেস্ট “…
সঞ্চালক আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেন,
-এই যেমন আজ আপনারা ম্যাচিং করে পোশাক পরে এসেছেন, ঠিক তেমন কতোটা মিল আপনাদের মনেও আছে সেটাই এই রাউন্ডে টেস্ট করা হবে। সঠিক উত্তর দিলে পাঁচ নম্বর,আর ভুল হলে মাইনাস তিন। কি বলছেন সবাই, শুরু করা যাক তাহলে?
আশেপাশে একটা ছোট্ট ভিড় জমেছিল। তাদের সমোচ্চারিত ধ্বনির মাঝেই খুব কষ্ট করে শুনলাম, সুমন আমাকে জিজ্ঞেস করছে,
– তুমি আজ ইচ্ছে করে ম্যাচিং করেছো না কি?
না শোনার ভান করে আমি বললাম,
– পরে শুনবো। এখন খেলায় মন দিই।
শুরু হলো আমাদের ফাইনাল রাউন্ডের খেলা। প্রত্যেক কাপলকে একটা কাগজ আর পেন দিয়ে দুই প্রান্তে মুখ ঘুরিয়ে দাঁড়াতে বলা হলো। তারপর সঞ্চালকের এক একটি প্রশ্নের উত্তর, দুজনের দিকে না তাকিয়ে লিখতে হবে ওই কাগজে। বেশ মজার খেলা, আগেও দেখেছি টিভিতে। তবে নিজেদের মধ্যে এই খেলা হবে ভেবে খুব ভালো লাগছিল। আমার ছেলে বলে উঠলো, ” মা, পাপাই মন দিয়ে আঙ্কেলের প্রশ্ন গুলো শুনবে। ” ওর কথা শুনে সবাই হেসে উঠলো। সঞ্চালক মজা করে বললেন,
– ঠিক বলেছিস, আজ মা বাবাদের পরীক্ষা নেওয়া হবে। কে কতো মনোযোগী সেটাই দেখার।
প্রথম প্রশ্ন এলো, আমাদের প্রিয় রঙ কি? সুমনের প্রিয় রঙ সবুজ, তাই আমাদের ঘরের সব দেওয়ালে ও সবুজের নানা রকম শেড দেওয়া রঙ করিয়েছিল। আমার পছন্দ গোলাপি। পরের প্রশ্ন, প্রিয় পোশাক, সুমন ফরমাল ড্রেস পছন্দ করে। ওর জন্য জামাইষ্ঠীর কেনাকাটা আমাকেই তো করতে হয়। কিন্তু আমি লং স্কার্ট পরতে খুব ভালোবাসি। তার পরের প্রশ্ন, প্রিয় বেড়ানোর জায়গা। আমাদের দুজনের পাহাড় পছন্দ বলেই আমরা হানিমুনে দার্জিলিং গিয়েছিলাম। এরপর একটু অন্য রকম প্রশ্ন পেলাম, আমাদের রাগ হলে কীভাবে তা ভাঙাতে হয়। সুমনের রাগ খুব একটা নেই, মাঝে মধ্যে মুড অফ থাকলে ওকে ভালো কিছু রেঁধে খাওয়ালেই ঠিক হয়ে যায়। তবে ইদানীং আমার রাগ হলে সুমন আর ভাঙানোর চেষ্টাও করেনা। নিজে থেকেই ঠিক হতে হয় আমাকে। তার পরের প্রশ্ন, শেষ কবে দুজনে বলেছি, আই লাভ ইউ… ঠিক মনে নেই, ছেলে হবার আগে ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে বলেছিলাম বোধহয়। ওটাই লিখলাম। সুমন মনে হয় হানিমুনে গিয়ে বলেছিল। প্রিয় খাবার, সুমনের পছন্দ ডাব চিংড়ি। আর আমার ভীষণ পছন্দের মায়ের হাতের তৈরী ছানার পায়েস। “ছয়ে ছক্কা”র এই রাউন্ড ছয় মিনিটের মধ্যে শেষ হলো। এইবার ফলাফল ঘোষণার সময়। আমি ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলাম,
– কি গো সব ঠিক করে লিখেছো তো?
একটু হোঁচট খেল সুমন। বললো,
– মনে তো হয়! তুমি ?
– আমি সব পেরেছি। মনে হচ্ছে আমরাই জিতবো। তাহলে কিন্তু আজ রীতা আর কেকা ট্রিট না নিয়ে ছাড়বে না।
ফলাফল হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে সঞ্চালক। আমাদের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছিলেন। বললেন,
– কতো বছর সংসার করছেন?
সুমন বলার আগেই আমি বললাম,
– আট বছর।
সঞ্চালক প্রথমেই আমাদের লেখা কাগজটাই পড়ে শোনাতে শুরু করলেন। দুজনের নিজের পছন্দ আর পার্টনারের পছন্দ পাশাপাশি লেখা। বেড়ানোর জায়গা আর প্রিয় রঙ ছাড়া আর কোনো উত্তরই ঠিকঠাক লিখতে পারেনি সুমন! কিন্তু আমি সবকটা ঠিক ঠাক লিখেছি। একটা বিষণ্ণতা বোধ চেপে বসলো মনের মধ্যে। সুমনের দোষ নেই, ও কখনো জানার চেষ্টাই করেনি আমাকে। আমি ছেলের পেছনে যত ব্যস্ত হয়েছি, ও ততই বেশি করে মনোযোগী হয়েছে ওর কেরিয়ার নিয়ে। আমার ছোটখাটো অসুখের দিনগুলোও অভিমান করে সুমনের কাছে লুকিয়েছি, মনে হতো ও নিজে কেন অনুভব করে না! আবার ওর কাজের উন্নতিতে , এক্সট্রা পারফরম্যান্স পয়েন্ট পাওয়াতে আত্মীয় স্বজনদের কাছে বড়াই করে গল্প করেছি। কবে থেকে যে নিজেকে ওর পছন্দ,অপছন্দের ছাঁচেই গড়ে ফেলেছি মনে নেই। আমিই ওকে একটা কমফোর্ট জোনে থাকতে অভ্যস্থ করে দিয়েছি, হয়তো বুঝতেই পারেনি আমারও কিছু দাবি, দাওয়া থাকতে পারে। আমারই উচিত হয়নি ভালো করে খোঁজ খবর না নিয়ে এই শো’তে অংশ নেওয়া! লোক হাসি হলো শুধু শুধু।
আমরা তৃতীয় স্থানে শেষ করলাম। অন্যদিকে পাঁচটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়ে রীতা আর ওর হাজব্যান্ড ” ম্যাড ফর ইচ আদার” খেতাব জিতে নিলো। আমি দৌড়ে গিয়ে রীতাকে জড়িয়ে ধরেছি, ও বোধহয় পড়তে পারলো আমার মনের কথা। বললো,
– সুমনের কাছে তুই এতোটাই অচেনা! এগুলো তো খুব সাধারণ প্রশ্ন। এই খেতাবটা তোরা জিতলে সবচেয়ে বেশি খুশি হতাম পায়েল।
আমার চোখের কোণটা চিকচিক করে উঠলো। পাহাড়ে হানিমুন যাবার পরিকল্পনা আমার ছিল সেটা মনে আছে সুমনের,তবে রঙের ব্যাপারটা আজ আমাকে গোলাপি শাড়ি পরতে দেখেই আন্দাজে ঢিল মেরেছে ও। ছেলের মন খারাপ হয়ে গেছে খুব। কাঁদো কাঁদো গলায় আমার কাছে এসে বললো,
– পাপাইয়ের জন্য তুমি হেরে গেলে মা।
কথাটা তীরের মতো এসে বিঁধলো আমার বুকে।
অভিনন্দন জানাতে সুমন কাছে আসে, রীতা বলে ওঠে,
– থ্যাঙ্ক ইউ। আসল কাপল শো তো আমরা আগেই জিতে গেছি সুমন। একে অপরকে জানা, জানতে চাওয়া, বুঝতে চেষ্টা করা, রাগ,অভিমানের খেয়াল রাখা, আর একসাথে একটুখানি কোয়ালিটি টাইম কাটানো এসবের মধ্যেই তো আসল রং মিলান্তি।
একটা গ্রুপ ছবি নেওয়ার জন্য আবার পাশাপাশি দাঁড়ালাম আমি আর সুমন। আমার চোখে চোখ রাখতে পারলোনা।ওর মুখটা দেখে মায়া হচ্ছে আমার। আরও একবার ওর হৃৎস্পন্দনটা অনুভব করতে পারছিলাম, আগের থেকে আরও বেশি জোরে। এটাই বা কম কি!(সমাপ্ত)