সুমিত চক্রবর্তী
ফেসবুক ঘাঁটছিলাম। হঠাৎ করেই নজরে পড়ে গেল। চোখ আটকে গেল একটা গ্রুপে— প্রাত্যহিকী পরিবার। সেই গ্রুপে গিয়ে যেন গুপ্তধনের সন্ধান পেলাম। রোজ সকালে যে প্রাত্যহিকী অনুষ্ঠান, সেখানে যেসব চিঠি পড়া হয়, তা আপলোড করা হচ্ছে।
টাইম মেশিনে চড়ে যেন সেই ছেলেবেলায় পৌঁছে গেলাম। আমাদের বেড়ে ওঠার সঙ্গে অনেকটাই জড়িয়ে ছিল এই প্রাত্যহিকী। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই লেখালেখির শুরু। কবিতা তো লিখতামই, সেইসঙ্গে বিভিন্ন কাগজ/পত্রপত্রিকায় চিঠি লিখতাম। এবং অবশ্যই চিঠি লিখতাম প্রাত্যহিকীতে। একেক পক্ষে একেকটি বিষয় থাকত। পনেরো দিন ধরে চলত সেই বিষয়ের ওপর চিঠি পড়া।
বিষয় মনের মতো হলে চিঠি লিখতাম। কোনটা পড়া হত, আর কোনটা পড়া হত না, ঠিকঠাক বুঝতেও পারতাম না। কারণ, সকালের দিকে টিউশনি থাকত। তবে, আমার এক জেঠু ছিলেন, যিনি রোজ প্রাত্যহিকী শুনতেন। আমার চিঠি পড়া হলে, তিনিই খবর দিতেন। আবার কখনও কখনও প্রাত্যহিকী শুনব বলে কোনও না কোনও অজুহাতে টিউশনি অফ দিয়েছি। নিজের নাম শুনতে পেয়ে কখনও কখনও দারুণ আনন্দ হয়েছে। আবার আমার চিঠি না পড়ায় দুঃখও পেয়েছি। সবমিলিয়ে এই প্রাত্যহিকীকে ঘিরে আমাদের কৈশোরের অনেকটাই কেটেছে।
এফ এম এল। কলকাতা ক যেন হারিয়ে গেল। আর শোনাও হল না। মাঝে মাঝেই আক্ষেপ করতাম, প্রাত্যহিকী কেন শোনা যায় না। যাক, অন্তত ফেসবুকের সৌজন্যে সেই আক্ষেপ এবার মিটতে চলেছে। রোজ শুনতে পারব কিনা জানি না। তবে মাঝে মাঝে তো পারব। আমার ধারণা, আমার মতো অনেকেরই বেড়ে ওঠার সঙ্গে এই প্রাত্যহিকী জড়িয়ে আছে। তাই মনে হল, শুধু একা একা আনন্দ পেয়ে লাভ কী? আরও অনেকের মধ্যে এই আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়া দরকার। সেই কারণেই বেঙ্গল টাইমসের মাধ্যমে আমার এই অনুভূতি তুলে ধররাম। নিজের নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ‘প্রাত্যহিকী পরিবার’ গ্রুপের সদস্য হোন। প্রতিদিনের অনুষ্ঠান সেখানে আপলোড করা হচ্ছে। এমনকী কার কার চিঠি পড়া হল, সেই তালিকাও শুরুতেই পেয়ে যাবেন।
(ওপেন ফোরাম। পাঠকের মুক্তমঞ্চ। আপনিও আপনার ভাল লাগা অনুভূতি মেলে ধরতে পারেন। নানা বিষয়ে আপনার পরামর্শ/সমালোচনাও তুলে ধরতে পারেন। পৌঁছে যাবে হাজার হাজার পাঠকের কাছে। চিঠি লেখার ঠিকানা: bengaltimes.in@gmail.com)