জয়দীপ চক্রবর্তী
‘উৎসব শেষ। সামনে এখন হু হু শীত। দিন ফুরিয়ে যায় সহজে। তারপর মন খারাপ করা সন্ধে–রাত। সেই রাত যত গভীর হয়, তত যেন এক শূন্যতা বুকের ভেতর থেকে বেরিয়ে মিশে যেতে থাকে সেই মহাশূন্যে।
এমন শীত–শীত রাতে কত কথা মনে পড়ে। সেই ছেলেবেলা, সেই কলেজবেলা, সেই সব বন্ধুবান্ধব…
মনে পড়ে এমনই এক শীতে গিয়েছিলাম শিমুলতলা। তখন যাদবপুরে পড়ছি। শিমুলতলার রুখু প্রান্তর, জোনাকি ভরা অন্ধকার মাঠ মনে ঘোর লাগিয়ে দিয়েছিল। ভেবেছিলাম, আবার একদিন আসব। একা একা ঘুরব চারপাশে।
কিন্তু আর যাওয়া হয়নি। প্রতিবার শীত এলেই শিমুলতলার সেই প্রান্তর, সেই অন্ধকার দেখতে পাই। ভাবি, যাব। একদিন নিশ্চয়ই যাব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুতেই যেন যাওয়া হয় না। বছরের পর বছর গড়িয়ে যায়!
এখন বুঝি, শিমুলতলায় কখনও যাওয়া যায় না। শিমুলতলা একবারই আসে জীবনে। সেই স্মৃতি এবং ফেরার স্বপ্ন নিয়েই জীবন কেটে যায়।’
ওপরের লেখাটা কপি পেস্ট করা। হাল আমলের নাম করা ঔপন্যসিক ও ছোট গল্পকার এবং ‘আনন্দমেলা’ পত্রিকার সম্পাদক সিজার বাগচীর ফেসবুক পেজের একটি লেখা। মনকে দূরে কোথাও দূরে দূরে নিয়ে যেতে পারা লেখার জন্য সিজার বাগচীর প্রসিদ্ধি।
এখন প্রশ্ন, হঠাৎ এই লেখাটা নিলাম কেন? লেখাটা পড়ে দেখুন ভাল করে। যে জায়গায় ফিরে যাওয়ার জন্য রোমান্টিক আকুতি সেই জায়গাটার নাম শিমুলতলা। হ্যাঁ, ‘দাদার কীর্তি’ র সেই শিমুলতলা। কেদার সরস্বতীর সেই অপাপবিদ্ধ প্রেমের অঙ্কুরোদগমের সেই শিমুলতলা। পপকর্ন–কোল্ডড্রিংকসের সাময়িক উন্মাদনার বাইরে গিয়ে বাঙালির গভীর প্রেমের স্মারক হয়ে রয়েছে যে শিমুলতলা। বাঙালি প্রেমের সেই সব পেয়েছির দেশ। আজও গভীরতা বিশিষ্ট যে কোনও মেয়েই চায় কেদারের মতো সরল প্রেমিক, যে কোনও ছেলেই চায় বাস্তবের সব রুক্ষতার থেকে নিজেকে জুড়োতে সরস্বতীর মতো শুধু ভালোবাসার জন্য ভালোবাসতে পারা ব্যক্তিত্বময়ী কোনও প্রেমিকাকে।