দেরিতে হলেও শুভবুদ্ধি এল!‌

কুন্তল আচার্য

দেরিতে হলেও তাহলে শুভবুদ্ধির উদয় হল।

কার বুদ্ধিতে ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর লকডাউনের দিন ঘোষণা হয়েছিল, কে জানে!‌ ১৩ সেপ্টেম্বর জয়েন্ট এন্ট্রান্সের সর্বভারতীয় নিট পরীক্ষা। তার আগে পরপর দুদিন কেউ লকডাউন ডাকে!‌

আগে জেলায় জেলায় সেন্টার পড়ত। কিন্তু সর্বভারতীয় স্তরের পরীক্ষায় সারা রাজ্যে হাতে গোনা কয়েকটি শহরে পরীক্ষা। এখানে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের ছেলেকে যেতে হবে শিলিগুড়ি। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বর্ধমান, বীরভূম এই সব জেলার ছেলেদের হয়ত দুর্গাপুর। আশপাশের পাঁচ ছটি জেলার পরীক্ষার্থীদের সেন্টার কলকাতায়।

lockdown3

এসব পরীক্ষার ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীরা সাধারণত একদিন বা দুদিন আগে কলকাতায় আসেন। সেন্টার দেখেন। অন্তত পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনোয় যেন কোনও অনিশ্চয়তা না থাকে, তা নিশ্চিত করতে চান। কিন্তু কোনওকিছু না বুঝেই শুক্র ও শনিবার লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল। বিভিন্ন মহল থেকে তুলে নেওয়ার দাবি আসছিল। কিন্তু সরকার সেভাবে কর্ণপাত করছিল না। যাক, দেরিতেও হলেও অন্তত শনিবারের লকডাউন উঠেছে। পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা অনেকটাই স্বস্তি পেলেন।

সহজ একটা সিদ্ধান্ত নিতে এত সময় লাগল!‌ পরীক্ষার্থীদের এতবড় একটা সমস্যা শিক্ষামন্ত্রীকে ভাবায়নি!‌ ভাবালেই বা উপায় কী!‌ মুখ্যমন্ত্রী না চাইলে লকডাউন উঠবে, এটা শিক্ষামন্ত্রী বিলক্ষণ জানেন। আর মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করতে গেলেও যেটুকু সাহস লাগে, সেটুকুও শিক্ষামন্ত্রীর নেই। ফল যা হওয়ার, তাই হল। দিনের পর দিন ব্যাপারটা নিয়ে অনিশ্চয়তা রইল।

বিরোধীরাও সেভাবে দাবিটি তুলে আনতে পারেননি। দাবি জানানো মানেই ঝগড়া করা নয়। রাস্তায় নামারও দরকার পড়ে না। বিনীতভাবে একটা চিঠিও তো লেখা যায়। সেই চিঠি লেখা হল, তবে অনেক দেরিতে। ছাত্র সংগঠনগুলিও এই ব্যাপারে তাদের ভূমিকা পালনে অনেকটাই ব্যর্থ। এমন একটা জ্বলন্ত সমস্যা। সেভাবে তাঁরা সামনে আনতে পারলেন কই!‌

যাই হোক, লকডাউন উঠেছে, এটা স্বস্তির। এমনিতেই আমাজের রাজ্যে ডাক্তারের অভাব। সেই কারণে মুখ্যমন্ত্রীকে মাঝে মাঝেই আক্ষেপ করতে দেখা যায়। আর এবার অর্ধেকের বেশি পরীক্ষার্থী যদি পরীক্ষাই না দিতে পারতেন!‌ সেটা রাজ্যের পক্ষে বিরাট এক লজ্জার বিষয় হয়ে দাঁড়াত। দেরিতে হলেও ভুল শুধরে নেওয়ায় সরকারকে অভিনন্দন।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.