স্মৃতিটুকু থাক
একবার হোলির সময় আমরা কয়েকজন বন্ধু দল বেঁধে বেড়াতে গিয়েছিলাম গালুডি। ঘাটশিলা পেরিয়ে সেই গালুডি খুব সুন্দর জায়গা। কুলকুল করে বয়ে চলেছে সুবর্ণরেখা। নদীর পাড়েই মহুয়া খাচ্ছিল একদল আদিবাসী। আমাদেরও ইচ্ছে হল, একটু মহুয়া খাই।
একজন আদিবাসী কাকাকে বললাম, আমাদের একটু মহুয়া দেবে! সেই কাকা বলল, আপনারা খাবেন? আমি বললাম, কেন খাব না? কাকা বলল, আমার সঙ্গে আসুন। বলেই হনহন করে হাঁটতে শুরু করল। প্রায় দু কিলোমিটারের মতো পথ। সে বকবক করে গেল। মহুয়ার ঘোরে বলে যাচ্ছিল, হালকা চালের কথা, কিন্তু অধিকাংশ কথার মধ্যে এক গভীরতা লুকিয়েছিল। মনে হচ্ছিল, যেন এক দার্শনিকের সঙ্গে হাঁটছি। মনে মনে নামকরণ করে ফেললাম, দোবরু পান্না। হ্যাঁ, আরণ্যকের সেই দোবরু পান্না।
নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আমাদের মহুয়া খাওয়াল। একটা বোতলে করে মহুয়া ভরেও দিল। টাকা দিতে গেলাম। কিছুতেই নিল না। বলল, আপনারা মহুয়া খেতে চেয়েছেন, এ তো আমার সৌভাগ্য, এর জন্য টাকা নেব কেন! সেই কাকার আসল নাম আর মনে নেই। কিন্তু হোলি এলেই আমাদের সেই দোবরু পান্নার কথা খুব মনে পড়ে।
দেবাশিস মণ্ডল, গড়িয়া
(বেড়াতে গিয়ে বা অন্য কোথাও আপনি কি এমন কোনও মানুষের সন্ধান পেয়েছেন? লিখে পাঠাতে পারেন তাঁর কথা। )