এত প্রচার, এত আস্ফালন, লোক কই?‌

একেকটা কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রীর চারটে–‌পাঁচটা করে সভা। কিন্তু লোক কোথায়?‌ আশি ভাগ তো আশা কর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি, সিভিক ভলান্টিয়ারে ভর্তি। সাধারণ মানুষ বা তৃণমূল কর্মীরা কোথায়?‌ লোক জড়ো করতে ভরসা সেই পুলিশ। এই অশনি সঙ্কেতটা নেত্রী বুঝতেও পারছেন না!‌ লিখেছেন ধীমান সাহা।

 

তৃণমূলের জনভিত্তি যে এতটা নেমে গেছে, তা সত্যিই আগে ভাবা যায়নি। বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশ আপ্তবাক্য আওড়ানো হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু ঠিকঠাক ভোট হলে কুড়িটি আসন পাওয়াও বেশ মুশকিল। নির্বাচনী সমীক্ষা কী বলছে, তা নিয়ে ভাবছি না। আমার মতামতের সঙ্গে অনেকে একমত নাও হতে পারেন। কিন্তু ঠিকঠাক ভোট হলে তৃণমূলের ঝুলিতে তিরিশ শতাংশ ভোটও আসবে না। বাকি সত্তর ভাগের মধ্যে কার ঝুলিতে কতটা পড়বে, তা বলা মুশকিল। সেই কাটাকাটির অঙ্কে হয়ত কয়েকটা বাড়তি আসন পেতে পারে।

mamata

এত উন্নয়নের ফিরিস্তি, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সভায় এমন করুণ দশা!‌ সাধারণ মানুষ কই?‌ তৃণমূল কর্মীই বা কই?‌ অধিকাংশ সভায় যা লোক হচ্ছে, তা স্বয়ং মমতা ব্যানার্জিকে লজ্জায় ফেলে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। সেই লোক জোগাড় করতেও ভরসা সেই পুলিশ। তৃণমূল নেতাদের তেমন কোনও অবদান নেই। অধিকাংশ সভায় কারা হাজির আছেন, সেই মুখগুলো লক্ষ করুন। নিজের নিজের এলাকায় খোঁজ নিন। অঙ্গনওয়াড়ি, আশা কর্মী আর সিভিক ভলান্টিয়ার। এই তিন শ্রেণিই মূলত দর্শক। তাঁদের চাকরির ক্ষেত্রে নানা সমস্যা হতে পারে। নানা ভয় দেখিয়ে তাঁদের আনা হচ্ছে। এর বাইরে ব্লক বা পঞ্চায়েতের কিছু ঠিকাদার লোক পাঠাচ্ছেন। পঞ্চায়েত থেকে নানাভাবে কাজ পেয়েছেন, এমন লোকদের ধরে আনা হচ্ছে। সেই একই লোককে মিছিলে হাঁটানো হচ্ছে। তাঁদেরই সভায় আনা হচ্ছে। প্রতিটি সভার সত্তর থেকে আশিভাগ লোক ডাইরেক্ট বেনিফিসিয়ারি।

এত উন্নয়নের ঢাক বাজানো হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের বা তৃণমূল কর্মীদের তেমন অংশগ্রহণ নেই। ভরসা করতে হচ্ছে সেই পুলিশের ওপর। এর থেকে লজ্জার আর কী হতে পারে?‌ জানি, এখন অনেকেই এটা বিশ্বাস করবেন না। প্লিজ নিজের নিজের এলাকায় খোঁজ নিন। তাহলেই ছবিটা আপনার কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে।

(‌ওপেন ফোরাম। পাঠকের মুক্তমঞ্চ। পাঠক এখানে নিজের ভাবনা মেলে ধরতে পারেন। মতামতের দায় সম্পূর্ণই পাঠকের। আপনিও আপনার মতামত ও পর্যবেক্ষণ তুলে ধরতে পারেন। )‌

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.