সবুজ সরখেল
সহজ বিষয়কে কীভাবে জটিল করে তুলতে হয়, একটা সুন্দর সম্ভাবনাকে কীভাবে পণ্ড করতে হয়, তা ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের দেখে শেখা উচিত।
কয়েক বছর আগে স্পনসর হিসেবে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে কোয়েস। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ঝামেলার সূত্রপাত। কোয়েস নাকি সদস্য–সমর্থকদের আবেগকে বুঝছে না। কোয়েসের শর্ত মানলে নাকি ক্লাবের ঐতিহ্য নষ্ট হয়ে যাবে। এই বাহানায় কোয়েসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হল।
লাল হলুদ কর্তারা বড়মুখ করে বলেছিলেন, অনেকের সঙ্গে কথা চলছে। কোয়েস চলে গেলেও কোনও সমস্যা হবে না। বিকল্প স্পনসর তৈরি আছে। মাসের পর মাস পেরিয়ে গেল। নতুন স্পনসরের দেখা নেই। এই কর্তাদের যা বিশ্বাসযোগ্যতা, কোন আহাম্মক টাকা ঢালতে এগিয়ে আসবে? ফল যা হওয়ার, তাই হল। কাউকেউ রাজি করানো গেল না। শেষমেষ মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া আর উপায় রইল না। মুখ্যমন্ত্রীর বদান্যতায় শ্রীসিমেন্টে যদিও পাওয়া গেল, মরশুম শেষ হতেই সেখানেও বিবাদ শুরু। এমনই পরিস্থিতি, শ্রীসিমেন্টের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়াও সময়ের অপেক্ষা।
গত কয়েক মাস ধরে শুধু চিঠি চাপাটির ছেলেমানুষি চলেছে। ইস্টবেঙ্গল একবার চিঠি দিচ্ছে, ইনভেস্টর শ্রী সিমেন্ট একবার চিঠি দিচ্ছে। নিমেশে সেইসব চিঠি মিডিয়ায় ও সোশ্যাল মিডিয়ায় চলে আসছে। কারা ফাঁস করছেন এই সব চিঠি? তাঁদের ছেলেমানুষ ছাড়া কীই বা বলা যায়!
প্রাথমিক চুক্তির সঙ্গে মূল চুক্তির কী ফারাক? যদি ফারাক থাকেও, আলোচনা তো করাই যেত। তাতে ফারাক অনেকটা কমে আসতে পারত। দু–টপক্ষই নিজেদের যুক্তি তুলে ধরতে পারত। বিশেষ করে, শ্রী সিমেন্ট যখন প্রায় পঞ্চাশ কোটি টাকা ঢেলে বসে আছে, ভবিষ্যতেও আরও বিনিয়োগ করতে চায়, তাই লাল হলুদ কর্তাদেরই উচিত ছিল, বিষয়টার দ্রুত মীমাসা করা। কিন্তু তাঁরা মেতে রইলেন চাপ তৈরির খেলায়। দেখাতে চাইলেন, ক্লাবের স্বার্থ বিপণ্ণ। আসলে, কার কোন স্বার্থ বিপণ্ণ হতে বসেছিল, সবাই জানে। শুধুমাত্র এক–দুজন কর্তার খামখেয়ালিপনায় এবার হয়ত আইএসএলের আঙিনার বাইরে থাকবে লাল হলুদ। তারপরেও এই কর্তারা বুক ফুলিয়ে প্রেস কনফারেন্স করেন। যতদিন এই নিষ্কর্মা কর্মকর্তারা থাকবেন, ততদিন ক্লাবের স্বার্থ সত্যিই বিপণ্ণ।