নানা বিষয়ে এভাবেই মতামত চাওয়া হোক

দেবাশিস মণ্ডল

দেরিতে হলেও শুভবুদ্ধি এল।
মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক নিয়ে ঠিক কী করা উচিত, এখনও বুঝে উঠতে পারছে না সরকার। শুধু আমাদের রাজ্য সরকার নয়, অধিকাংশ রাজ্যই এই নিয়ে একটা অদ্ভুত সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। পরীক্ষা করাতে গেলে যদি কোনও বিপদ ঘটে যায়, যদি কোনও ছাত্রের করোনা হয়ে যায়, তখন দায় এসে পড়বে। সেই ভয় তাড়া করছে প্রায় সব সরকারকেই।

madhyamik

আমাদের রাজ্য এই ব্যাপারে জনতার মতামত চেয়েছে। সেই মতামত কতখানি গ্রাহ্য হবে, জানা নেই। তবে মতামত চাওয়াটা অবশ্যই শুভ লক্ষ্মণ। আসলে, কলকাতা নামক কুয়োয় থাকতে থাকতে রাজ্যের আসল ছবিটা প্রশাসকদের অজানাই থেকে যায়। কলকাতায় যে ছবিটা দেখেন, সেটাইকেই সারা বাংলার ছবি মনে করেন। মোট যত ছাত্র মাধ্যমিক দেয়, তার পাঁচ শতাংশ ছাত্রও কলকাতার নয়। বাকি ৯৫ শতাংশের বেশি গ্রাম ও মফস্বলের ছেলে। অথচ, কীসে তাদের সুবিধে–‌অসুবিধে, সে সম্পর্কে মন্ত্রী–‌আমলাদের ধারণাই নেই।

তাই মুখ্যমন্ত্রী মর্জিমাফিক সিদ্ধান্ত নেন। সেটাই বাকিদের মেনে নিতে হয়। অন্য কোনও মত সেখানে উঠে আসার সুযোগও নেই। পরীক্ষা হবে কিনা, হলে কীভাবে হবে, তা নিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। আমি একজন শিক্ষক। আমি মনে করি, পরীক্ষা হওয়া উচিত। তবে এক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীদের দূরে না পাঠিয়ে হোম সেন্টারে পরীক্ষার ব্যবস্থা হোক। অর্থাৎ, যে স্কুলে সে পড়ছে, সেই স্কুলেই পরীক্ষা দেবে।

অধিকাংশ ছাত্রই স্কুলের আশেপাশেই থাকে। তারা অনায়াসে হেঁটে বা সাইকেলে আসতে পারবে। কেউ কেউ হোস্টেলে থাকে, তারা হোস্টেল থেকেই পরীক্ষা দেবে। একটা ক্লাসের পরীক্ষা। বাকি ক্লাসগুলোর তো এমনিতেই ছুটি। ফলে, একেকটা রুমে দশ–‌পনেরো জন করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসানোই যায়। এতে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

আমার মনে হয়, গ্রাম গঞ্জের অধিকাংশ শিক্ষক ও অভিভাবক চাইবেন পরীক্ষা হোক। কারণ, নাইনে পরীক্ষার ভিত্তিতে গড়পড়তা নম্বর দেওয়া হোক, এটা কোনও সুস্থ যুক্তি হতে পারে না। সবকিছুই স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে। সেখানে নিজের স্কুলে একটু নিয়ম মেনে পরীক্ষা আয়োজন করা যাবে না!‌

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.