সুশান্তকে নিয়ে একটু বাড়াবাড়িই চলছে

সুমিত চক্রবর্তী

গত দু মাস ধরে সুশান্ত সিং রাজপুতকে নিয়ে যা চলছে, তা বাড়াবাড়ি বললেও কম বলা হয়।

যে কোনও মৃত্যুই দুঃখের। একজন তরুণ অভিনেতার মৃত্যু হয়ত আরও বেশি দুঃখের। কিন্তু সেটা আত্মহত্যা না খুন, তা নিয়ে নানা চর্বিত চর্বন চলছে। যা ক্রমশ বিরক্তির পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।

সিবিআই তদন্তের রায় দেওয়া হয়েছে। জানি না, সিবিআই কতদিন তদন্ত চালাবে। নানা খবর হাওয়ায় ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আপাতত এটাই চলবে। জাতীয় স্তরের মিডিয়া এটা নিয়েই মেতে থাকবে। এমনকী এই রাজ্যের বাংলা কাগজগুলিও যেন অতিরিক্ত আদিখ্যেতা দেখাচ্ছে।

susant3

প্রথম কথা, সিবিআই দেওয়ার এই সিদ্ধান্তটা যতটা না তদন্তের স্বার্থে, তার থেকে বেশি রাজনৈতিক স্বার্থে। সিবিআই নানা লোককে জেরা করবে। অনেক নথি জোগাড় করবে। তারপর শেষমেশ অশ্বডিম্বই প্রসব করবে।

নেপোটিজম নিয়ে দিনের পর দিন চর্চা হল। কেউ বলছেন, বান্ধবী নাকি অনেক টাকা সরিয়েছেন। আরও কত কথা উঠে আসছে। কেন জানি না, আমার মনে হয় এটা নিখাদ আত্মহত্যা। সেটাকে কেন জোর করে খুন বলে চালানোর চেষ্টা হচ্ছে, বুঝি না। জোর করে একটা চাঞ্চল্য তৈরি করতেই হবে!‌

আমাদের রাজ্যে রিজোয়ানুরের মৃত্যুকে ঘিরেও এই কাণ্ড দেখেছিলাম। একটা আত্মহত্যাকে নিয়ে কতই না জলঘোলা হয়েছিল। এত বছর পেরিয়ে গেল। কই, আর তো কোনও উচ্চবাচ্য নেই। নাকি প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে!‌ এখন কেঁচো করতে গেলে কেউকে বেরিয়ে যাবে!‌ যদি আত্মহত্যা প্রমাণ হয়ে যায়, তাহলে যে এটাও প্রমাণ হয়ে যাবে, বিষয়টাকে নিয়ে তখনকার বিরোধীরা (‌এখনকার শাসক)‌ ও তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা অহেতুক বাজার গরম করেছিলেন।

সুশান্তের ক্ষেত্রেও তাই। বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই তাসকেই খেলতে পারে জেডিইউ, বিজেপি। মহারাষ্ট্র সরকারকে দুর্নামও করা হল। আবার বিহারে পালে হাওয়াও তোলা গেল। কিন্তু তদন্ত যেন থেমে না যায়। এক মাসের মধ্যে সিবিআই পরিষ্কার করুক, এটা খুন না আত্মহত্যা। যদি না পারে, তাহলে তদন্ত থেকে সরে যাক। যাঁরা খুন খুন করে চিৎকার করছিলেন, তাঁরা আগামী দু বছর কোনও বিষয়ে দয়া করে মন্তব্য করবেন না।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.