ক্ষমা চাইছি
ছোট ছোট ভুল অনেক সময় বারবার মনে পড়ে যায়। অনেক বছর পেরিয়ে গেলেও ভোলা যায় না। তেমনই একটি ভুলের কথা বলে হয়ত কিছুটা হালকা হতে পারব। তখন বোধ হয় ক্লাস নাইনে পড়ি। ক্লাসে নোটিশ দেওয়া হল, স্কুল ম্যাগাজিন বেরোবে। যারা যারা লেখা দিতে চায়, তাদের সাত দিনের মধ্যে লেখা দিতে হবে।
আমি বোধহয় সেই বিরল বাঙালিদের একজন, যে সারা জীবন একটিও কবিতা লেখেনি। তাই আমার লেখা দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ছিল না। কিন্তু আমার বন্ধু দেবরাজ আমাকে একটি কবিতা দিয়েছিল। সে জ্বরের জন্য কয়েকদিন স্কুলে যেতে পারেনি। এক বন্ধুর কাছে লেখা দেওয়ার কথা শুনেছিল। দেবরাজ আমাকে বলল, তুই তো স্কুলে যাচ্ছিস। এই লেখাটা বাংলার স্যারকে দিয়ে দিস। আমি যথারীতি লেখাটা দিতে ভুলে গেলাম। তিনদিন পর মনে পড়ল। তখন আর লেখাটা খুঁজেও পেলাম না। কী জানি, কোথায় হারিয়ে ফেলেছি। দেবরাজ লেখাটার ব্যাপারে আমাকে আর জিজ্ঞাসাও করেনি।
ম্যাগাজিন বেরোলো। তাতে দেবরাজের লেখা নেই। থাকার কথাও ছিল না। দেবরাজ ভেবেছিল, ওর লেখা হয়ত স্যারের ভাল লাগেনি। তাই ছাপা হয়নি। হয়ত মনে মনে স্যারের প্রতি রাগও হয়েছিল। কিন্তু আমি যে লেখাটা জমাই দিইনি, সেটা ওকে জানাতেও পারিনি। সেই ভুলের বোঝা আজও বয়ে বেড়াচ্ছি। দেবরাজ, সেদিনের সেই ভুলের কথা এতদিন পর তোর কাছে স্বীকার করছি। ওটাকে ভুল হিসেবেই দেখিস। বিশ্বাস কর, সেই ভুলটা ইচ্ছাকৃত ছিল না।
সজল চক্রবর্তী, কৃষ্ণনগর, নদীয়া
(স্মৃতিটুকু থাক। পাঠকের মু্ক্তমঞ্চ। এখানে ফেলে আসা জীবনের অনেক স্মৃতি উজাড় করে দিতে পারেন। অনেকদিনের লুকিয়ে রাখা কোনও ভুল স্বীকার করে নিজের মনকে কিছুটা হালকাও করতে পারেন। লিখে পাঠানা আপনার অনুভূতির কথা)