ময়ূখ নস্কর
প্রত্যেক পিতা বা মাতার কর্তব্য সন্তানকে বা সন্তানসম ব্যক্তিকে শিক্ষা দেওয়া। যাঁরা সমাজের অভিভাবক, নেতা তাঁদেরও এই কর্তব্য পালন করা উচিত। আমাদের ভারতীয় সংস্কৃতি বলে, বেয়াড়া সন্তানকে প্রয়োজনে প্রহার করতে হয়। তাতে সন্তান সুপথে চালিত হয়।
রাজনৈতিক নেতাদের পক্ষে পিতা বা মাতা হওয়া অনেক কঠিন ব্যাপার। তেমন নেতা আমাদের দেশে কেন গোটা পৃথিবীতেই কেউ নেই। কিন্তু তাঁরা খুব সহজেই শিক্ষকের মতো হতে পারেন। নিদেনপক্ষে বড় দাদার মতো। যিনি ধমকাবেন। শাসন করবেন। শিক্ষা দেবেন।
দেখা যাচ্ছে, বাবুল সুপ্রিয় নামক নেতাটি সেই ভূমিকা পালন করতে একান্ত অক্ষম। না যাদবপুরকাণ্ডে তাঁর কাজ ঠিক ছিল না ভুল, তা নিয়ে কোনও কথা বলছি না। সেই কাজের পক্ষে বিপক্ষে অনেক কথা হয়েছে। কিন্তু ঊর্মিমালা বসুর বিরুদ্ধে কুৎসিত আক্রমণ নিয়ে বাবুল এ কী করলেন?
প্রথমে একবার সমর্থন করি না বলে, বামপন্থী, জন্মান্ধ, ধর্মান্ধ ইত্যাদি না না কুযুক্তি তুললেন! বুঝলেন না এতে আপনার কদর্য মানসিকতার সমর্থকদের উস্কানি দেওয়া হল? দেশমাতা, গোমাতা সবার সম্মান নিয়ে গলা ফাটান, অথচ মায়ের বয়সী এক মহিলার অপমানের প্রতিবাদে সোচ্চার হতে পারলেন না? আপনার উচিত ছিল না নেতার ভূমিকা পালন করা? বড় দাদার ভূমিকা পালন করা? আপনার উচিত ছিল না, ওই বেয়াড়া বেহায়াদের সবক শেখানো? যাতে ভবিষ্যতে আপনার মায়ের বয়সী কোনও মহিলাকে অপমান করার সাহস না পায়? তা না করে আপনি ধর্মান্ধ–জন্মান্ধ আওড়ালেন?
এবং ঊর্মিমালা বসু। আপনারও তো সমাজের প্রতি কিছু দায়িত্ব আছে। যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীরা যেমন আপনার স্নেহের পাত্র, বাবুলও তো আপনার স্নেহের পাত্র হতে পারে। বাবুল আপনার ছেলের বয়সী। তাই সেই পুত্রসম বাবুলের প্রতি মাতার দায়িত্ব পালন করুন।
বাবুলকে বাড়িতে ডাকুন। যত্ন করে খাওয়ান। তারপর চুলের মুঠি ধরে আচ্ছা করে ঝাঁকিয়ে দিন। দেখবেন বাবুল শুধরে যাবেন। তিনি তাঁর দলীয় সহকর্মীদের সেই ঝাঁকুনি ফিরিয়ে দেবেন। সমাজ কিছুটা হলেও সুন্দর হবে।