শ্রীপর্ণা গাঙ্গুলি
তিনি চেয়েছিলেন ফেলুদা করতে। না, অভিনেতা হিসেবে নয়, পরিচালক হিসেবে। কিন্তু ফেলুদা করতে গেলে তো সত্যজিৎ রায়ের অনুমতি চাই। তাঁর সম্মতি ছাড়া তো ফেলুদা করা যাবে না। একদিন সাহস সঞ্চয় করে সত্যজিতের কাছে পৌঁছেই গেলেন অঞ্জন দত্ত। সরাসরি জানালেন, ‘গ্যাংটকে গন্ডগোল’ করতে চাই। আপনার অনুমতি চাই।
তার আগে মৃণাল সেনের ছবিতে কাজ করে ফেলেছেন। অভিনেতা হিসেবে কিছুটা পরিচিতি তৈরি হয়েছে। দেশ–বিদেশের অনেক ছবি দেখেছেন। সেসব নিয়ে অনর্গল বলে যেতে পারেন। এসব কারণে সত্যজিৎ কিছুটা পছন্দই করতেন অঞ্জনকে (তখনও গায়ক অঞ্জনের আবির্ভাব হয়নি)। তার ওপর টেলিভিশনের জন্য বানিয়েছিলেন রুদ্র সেনের ডায়েরি। অভিনেতা হিসেবে ছিলেন সব্যসাচী চক্রবর্তী। কিন্তু পরিচালক হিসেবে অঞ্জনও ছাপ ফেলেছিলেন।
হয়ত সেই কারণেই সত্যজিৎ সরাসরি না বলতে পারেননি। অঞ্জনের চিত্রনাট্য শোনার পর সম্মতি দিয়েছিলেন। তবে কয়েকটা শর্ত দিয়েছিলেন। কোন চরিত্রে কাকে মানাবে, সে বিষয়ে মতামতও দিয়েছিলেন।
তাহলে, ছবিটা হল না কেন? আটকে গেল সেই খরচের প্রশ্নে। ছবিটার প্রযোজনা করার কথা ছিল দূরদর্শনের। কিন্তু তখনকার সময়ে বরাদ্দ ছিল ১০ লাখ টাকার মতো। অঞ্জনের মনে হয়েছিল, ওই টাকায় গ্যাংটকে গন্ডগোল করা সম্ভব নয়। বাইরে থেকে অন্য কোনও প্রোডিউসারও এগিয়ে আসেননি। তাই তখনকার মতো রণে ভঙ্গ দিতে হল। পরে টেলি সিরিজের জন্য সন্দীপ রায় ফেলুদা শুরু করলেন। ফেলুদার ভাবনাও একটু একটু করে হারিয়ে গেল অঞ্জনের মন থেকে।