প্রশান্ত বসু
আমি নাইট রাইডার্সের সমর্থক নই। যদিও দলের নামের সঙ্গে ‘কলকাতা’ শব্দটা জুড়ে আছে, কিন্তু এই দলটার জন্য আলাদা কোনও আবেগ অনুভব করি না। এই দলটাও কলকাতা বা বাংলার জন্য আলাদা করে কিছু ভাবে বলে মনে হয় না।
যখন শুরুর দিকে সৌরভ গাঙ্গুলি ছিলেন, তখন দলটার সমর্থক ছিলাম। কিন্তু তারপর যখন থেকে সৌরভকে অসম্মান করে সরে যেতে বাধ্য করা হয়, তখন থেকে এই দলটার প্রতি আর কোনও অনুরাগ নেই। বছরের পর বছর বাংলার যোগ্য ক্রিকেটারদের ব্রাত্যই রেখেছে কেকেআর। বাংলার ছেলেরা অন্যান্য শহরের ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে চুটিয়ে খেলছেন, ম্যাচ জেতাচ্ছেন। অথচ, কলকাতার দলে তাঁদের জায়গা হয় না। বহু বছর ধরে শুনে আসছি, নাইট নাকি এই শহরে অ্যাকাডেমি করবে। আলাদা স্টেডিয়াম করবে। কোথায় কী? প্রতি বছর কুমির ছানা দেখানোর মতো করে এইসব কথা ভাসিয়ে দেওয়া হয়। দুটো গাছ লাগিয়ে পরিবেশ সচেতনতার বার্তা দেওয়া হয়। অর্থাৎ, পর্বতের মুষিকপ্রসব।
নিলামে যখন ঋদ্ধিমান সাহার নাম ওঠে, এই ফ্র্যআঞ্চাইজির কর্তারা এমন হাবভাব করেন, যেন এই নামটা কখনও শোনেনইনি। অন্য ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রেও চরম তাচ্ছিল্য। বাংলার ক্রিকেটারদের প্রতি যাঁদের এমন মনোভাব, তাঁদের প্রতি আমরাই বা এমন আদিখ্যেতা দেখাব কেন? তাই কলকাতা বনাম দিল্লি ম্যাচে আমার মতো অনেকেই দিল্লির জয় চেয়েছিল। কারণ, সেই শিবিরে অন্তত বাংলার আইকন সৌরভ গাঙ্গুলি ছিলেন। অন্তত অভিষেক পোড়েল ছিলেন। ২০১২ সালে এমনই হয়েছিল। সেদিন কলকাতা বনাম পুনে ম্যাচে ইডেনের বেশিরভাগ দর্শক পুনের হয়ে চিৎকার করেছিলেন। সেদিন শুধু সৌরভ গাঙ্গুলির টানেই মাঠে গিয়েছিলাম। সৌরভ দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। এবার কলকাতা–দিল্লি ম্যাচে অবশ্য টিকিট জোগাড় করতে পারিনি। তবু মন চাইছিল, সৌরভদেরই জয়। অন্তত নাইট বাহিনীর একটা শিক্ষা হওয়া দরকার ছিল।