কৃশাণু মজুমদার
আমি একজন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। যদিও আমাকে হোস্টেলে থাকতে হয়নি। একজন আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে, পরবর্তীকালে মেসে থেকে পড়াশোনা করেছি। কিন্তু সাম্প্রতিককালে যাদবপুর নিয়ে যা যা আলোচনা হচ্ছে, তা মন থেকে মেনে নিতে পারছি না। যাদবপুর মানেই মদ, গাঁজা। যাদবপুর মানেই উচ্ছৃঙ্খলতা— এরকম একটা ছবি তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। মানুষের মধ্যে এরকম একটা ধারণা গেঁথে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। সন্ধের টিভি চ্যানেল, বিভিন্ন কাগজ যেন এমন একটা মতবাদ প্রচারে অতিমাত্রায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।
সব প্রতিষ্ঠানেইর কিছু অনিয়ম থাকে। কিছু সংখ্যক পড়ুয়া তাতে যুক্ত থাকে। এমনটা আগেও ছিল। এখনও আছে। কিন্তু সেই কয়েকজনের আচরণ দিয়ে গোটা প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করার এই চেষ্টা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয়। কারা যাদবপুরে পড়তে আসে? বিভিন্ন বিভাগে অন্যতম সেরা ছাত্ররা। তাদের মেধা, তাদের যুক্তিবোধ তারিফ করার মতো। কারা সেখানে পড়ান? তাঁরাও একেকজন দিকপাল মানুষ। এক লহমায় সেসব ভুলে যাওয়া হচ্ছে। টুকটাক বিশৃঙ্খলা সব প্রতিষ্ঠানেই থাকে। সেটাকে বড় করে দেখানোর মধ্যে কোনও বাহাদুরি নেই।
না, র্যাগিংকে মোটেই সমর্থন করছি না। এটাও বিশ্বাস করি, কর্তৃপক্ষের আগেই আরও কঠোর হওয়া দরকার ছিল। ছাত্রদেরও র্যাগিং বন্ধে আরও কার্যকরী ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু যেসব টিভি চ্যানেলগুলি হইচই করছে, তাদের প্রশ্ন, এতদিন আপনারা কি ঘুমিয়ে ছিলেন? এখন ঘুম ভাঙল বলে তারস্বরে চিৎকার জুড়ে দিয়েছেন!