বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন: রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিধানসভা থেকে প্রতিনিধি থাকেন। ঠিক তেমনি কেন্দ্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লোকসভা বা রাজ্যসভার প্রতিনিধি থাকেন। এগুলো মূলত সর্বসম্মতির ভিত্তিতেই পাঠানো হয়। ভোটাভুটি সচরাচর হয় না।
কিন্তু এবার ইএসআই–তে রাজ্যসভার প্রতিনিধি কে থাকবেন, তাই নিয়ে ভোটাভুটি। আগে ছিলেন কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্য। এবারও তিনিই থাকলে ভোটাভুটির দরকার পড়ত না। কিন্তু তৃণমূলের দাবি, তাঁদের প্রতিনিধি পাঠাতে হবে। এই কারণে ভোটাভুটি জরুরি হয়ে পড়ল।
কী দেখা গেল? প্রদীপ ভট্টাচার্য যা ভোট পাওয়ার, পেলেন। কিন্তু তৃণমূল প্রার্থী দোলা সেন পেলেন নিজের দলের যত না সাংসদ, তার পাঁচগুনেরও বেশি ভোট। কোন যাদুমন্ত্র বলে এই ভোট এসে গেল, বলা মুশকিল। অঙ্ক থেকেই পরিষ্কার, বিজেপির ভোট পড়েছে দোলার হয়ে। এবং বিজেপি নেতৃত্ব এই সহজ সত্যিটা অস্বীকারও করেননি। কার্যত মেনেই নিয়েছেন।
তৃণমূল নেতৃত্ব প্রথমে অস্বীকার করলেন। কিন্তু পরে বোঝা গেল, এই দাবি একেবারেই নির্লজ্জ মিথ্যাচার হয়ে যাচ্ছে। কারণ, অঙ্কে মিলছে না। কংগ্রেসের সদস্যরা সবাই দোলাকে ভোট দিয়েছেন। আর বিজেপির লোকেরা প্রদীপ ভট্টাচার্যকে দিয়েছেন, এমনটা নিশ্চয় বিশ্বাসযোগ্য নয়।
সহজ কথা, তৃণমূল যে বিজেপির ভোট পেয়েছে, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। প্রশ্ন হল, বিজেপি কি স্বতস্ফূর্তভাবে এই ভোট তৃণমূলকে দিয়ে দিল? তৃণমূলের পক্ষ থেকে কি সাহায্যের আবেদন জানানো হয়নি? অনেকে বলতেই পারেন, সংসদে এমন সমন্বয় হতেই পারে। হ্যাঁ, পারে। তাহলে স্বীকার করুন, সাহায্য চেয়েছিলেন। এবং, এতবড় একটা সিদ্ধান্ত মমতা ব্যানার্জিকে না জানিয়ে নেওয়া হয়েছে? তাঁর অজান্তে বিজেপির কাছে সাহায্য চাওয়া হল, বিজেপি তৃণমূলকে ভোট দিয়েও দিল, এমনটা বিশ্বাসযোগ্য! যদি সত্যিই এমনটা হত, এতদিনে দোলা সেনকে বহিষ্কার করা হত।
মুখ্যমন্ত্রী এই নিয়ে দরবার করেছেন, এমনটা নাও হতে পারে। কিন্তু গোটা ব্যাপারটা তাঁর সম্মতিতে হয়েছে, এ নিয়ে কোনও সংশয় নেই। বাম ভোট কেন রামে গেছে, এই নিয়ে তিনি এত সোচ্চার। অথচ, বিজেপি এমপি–রা কংগ্রেসকে হারাতে তৃণমূল এমপি–কে ভোট দিলেন, অথচ তিনি কিছুই জানতেন না। তৃণমূল নেতৃত্ব গোল গোল কথা না বলে দুটি সহজ প্রশ্নের উত্তর দিন। ১) বিজেপির সাহায্য চাওয়া হয়েছিল কিনা। ২) মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি জানতেন কিনা।
এককথায় হ্যাঁ বা না। এর বেশি কিছু নয়।