উত্তম জানা
সবাই জানেন, উনি মধ্যসত্ত্বভোগী ছিলেন। সুবিধে করতে পারছিলেন না। তাই পদত্যাগ করলেন।
দীনেশ ত্রিবেদীর পদত্যাগের পর এমনই প্রতিক্রিয়া বেরিয়ে এল তাপস রায়ের মুখে। তাপস রায় যেমন তেমন লোক নন, তৃণমূলের মন্ত্রী বলে কথা। ১৯৯৬ এ কংগ্রেসের টিকিটে, তারপর ২০০১ থেকেই তৃণমূলের টিকিটে নির্বাচিত বিধায়ক। অর্থাৎ, তৃণমূলের টিকিটে তাঁর চারবার জেতা হয়ে গেল।
আচ্ছা, দীনেশ ত্রিবেদী কেন অপরিহার্য ছিলেন?
তিনি এই রাজ্যের মানুষ নন। দারুণ জনপ্রিয়, এমনটাও বলা যাবে না।
খুব পরিশ্রমী? অতিবড় গুণমুগ্ধও এমনটা বলবেন না।
দলের খুব অনুগত? তাও না। বরং অনেকদিন ধরেই বিক্ষুব্ধ হিসেবেই পরিচিত। রেলমন্ত্রী থাকার সময় বাজেট পেশ করতে গিয়ে বলে ফেলেছিলেন, রেল আইসিইউ–তে চলে গিয়েছে (ভুলেই গিয়েছিলেন, তাঁর আগে রেলমন্ত্রী ছিলেন মমতা ব্যানার্জি)। রাতারাতি সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপর গোঁসা হওয়াই স্বাভাবিক।
নীচু তলার কর্মীদের সঙ্গে দারুণে মেলামেশা করেন! দারুণ সম্পর্ক! বরং উল্টো কথাটাই শোনা যায়।
সংসদে জ্বালাময়ী ভাষণ দেন। তাও নয়। বরং, অভিযোগ, তিনি সরকারকে চটাতে চান না।
তাহলে তৃণমূলে তিনি এত অপরিহার্য কেন? ঘটনা হল, ২০০৯ নয়, দীনেশ ত্রিবেদী তৃণমূলের এমপি ২০০২ থেকে। তিনিই এই রাজ্য থেকে তৃণমূলের প্রথম রাজ্যসভা সদস্য। এই রাজ্য থেকে আর কাউকে রাজ্যসভায় পাঠানোর যোগ্য মনে করেননি তৃণমূল সুপ্রিমো। পাঠিয়েছিলেন দীনেশ ত্রিবেদীকে।
রাজ্যসভার টার্ম শেষ হয়ে যাওয়ার পর ২০০৯ ও ১৪ তে লোকসভায় জিতলেন ব্যারাকপুর থেকে। ২০১৯ এ লোকসভায় হারের পর ফের পাঠানো হল রাজ্যসভায়।
সহজ প্রশ্ন, কোন গুণটা দেখে তাঁকে এতখানি অপরিহার্য মনে করেছিল তৃণমূল?
আসল কারণটা তাপস রায় ফাঁস করেই দিলেন।