শতবর্ষে এই সঙ্কীর্ণতা খুব জরুরি ছিল!

বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন: চার ম্যাচ বাকি থাকতেই মোহনবাগানের পয়েন্ট হয়ে গিয়েছিল ৩৯। বাকি চার ম্যাচে হারলেও লিগ টেবিলের এক নম্বর জায়গাটা বদলাত না। কারণ, ধরাছোঁয়ার বাইরেই চলে গিয়েছিল মোহনবাগান। স্বাভাবিকভাবেই, তাদের চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেছে ফেডারেশন। একেবারেই সঠিক সিদ্ধান্ত। আই লিগকে তো  অনন্তকাল ধরে ঝুলিয়ে রাখা যায় না। কবে আবার ফুটবল চালু হবে, তার কোনও নিশ্চয়তাও নেই। কোথাও না কোথাও দাঁড়ি টানতেই হত। এই পরিস্থিতিতে মোহনবাগানকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা না করলে সেটাই অবিচার হত। একেবারে সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে ফেডারেশন।

mohun bagan2

কিন্তু এতেও ইস্টবেঙ্গল কেন বাগড়া দিতে চাইল, সেটা বোধগম্য হচ্ছে না। চার ম্যাচ বাকি থাকতে ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্ট ছিল ২৩। ধরেই নিলাম, বাকি চার ম্যাচ তারা জিতল। তাহলেও পয়েন্ট বাড়ত ১২। অর্থাৎ, মোট পয়েন্ট গিয়ে দাঁড়াত ৩৫। ইস্টবেঙ্গল সব ম্যাচ জিতছে, মোহনবাগান সব ম্যাচে হারছে, এমনটা ধরে নিলেও মোহনবাগানের সঙ্গে চার পয়েন্টের ব্যবধান। এরপরেও মোহনবাগানকে চ্যাম্পিয়ন মেনে নিতে আপত্তি কীসের? বাকি সব ক্লাব মেনে নিল। কোনও মহল থেকে আপত্তি এল না। আজগুবি দাবি নিয়ে আপত্তি এল শুধু ইস্টবেঙ্গল থেকে।

এমনিতেই এখন খুচরো ঝগড়া, খুচরো বিতর্ককে সরিয়ে রাখার সময়। সেই সময় কিনা খুঁচিয়ে বিতর্ক তোলা! তাঁরা কিনা আগ বাড়িয়ে ফেডারেশনে চিঠি দিল! তাঁরা কিনা মোহনবাগানকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণায় আপত্তি জানাল! ডার্বি ম্যাচে তারাই খেলতে চায়নি। ফেডারেশন প্রস্তাব দিয়েছিল, খালি মাঠে ডার্বি হতে পারে। মোহনবাগান রাজিই ছিল, কিন্তু ইস্টবেঙ্গল রাজি হয়নি। লিগ যদি মাঝপথে থমকে যেত, তাহলে তবু আপত্তির একটা কারণ থাকত। কিন্তু প্রায় শেষ দরজায় এসে যাওয়া লিগকে এভাবে বানচাল করলে সেটা ফুটবলের প্রতিই অন্যায় হত।

তাছাড়া, আরও একটা আজগুবি দাবি তুলেছিল ইস্টবেঙ্গল। দাবি ছিল, তাদের রানার্স ঘোষণা করতে হবে। তখনও চার ম্যাচ বাকি। লিগ টেবিলে অনেক ওলট পালট ঘটতে পারত। অঙ্কের বিচারে বা যুক্তির বিচারে কখনই এভাবে রানার্স ঘোষণা করা যেত না। কিন্তু মোহনবাগানকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করলে কারও কোনও আপত্তি থাকার কারণ ছিল না। কারণ, কোনও অঙ্কেই অন্য দলের পক্ষে মোহনবাগানকে টপকে যাওয়া সম্ভব ছিল না। তাছাড়া, যে দল চার ম্যাচ বাকি থাকতে চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত করে ফেলে, তাকে যদি চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা না হয়, তার থেকে বড় অন্যায় আর কী হতে পারত!

এইসব আজগুবি আপত্তি তুলে রাখলেই ভাল করত ইস্টবেঙ্গল। ক্লাবের শতবর্ষ চলছে। সেই সময়ে ক্লাবকে হাসির খোরাক করে তোলার দায়িত্ব নিলেন কর্মকর্তারা। শতবর্ষে আরও উদারতা যেখানে কাম্য, সেখানে আরও বেশি সঙ্কীর্ণতার পরিচয় দিলেন লাল হলুদ কর্তারা। নিজেদের ক্লাবকে নিজেরাই বোধ হয় কিছুটা হলেও অসম্মানিত করলেন।

 

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.