কাউকে শ্রদ্ধা যদি করতে হয়, তবে তা যেন আন্তরিক হয়। একবার শ্রদ্ধা জানালাম, পরক্ষণেই চোখ টিপে কটাক্ষ করলাম, তাহলে শ্রদ্ধাটা মূল্যহীন হয়ে পড়ে। এমন চমৎকার একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন, নিজেই যেন তাতে জল ঢেলে দিলেন। লিখেছেন সঞ্জয় পাত্র।।
চিত্রনাট্য যেন আগাম তৈরি ছিল। যাই ঘটুক, বক্তৃতার শেষে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলিঙ্গন করবেন। সেটাই করলেন রাহুল। বার্তা দিতে চাইলেন ঘৃণার পাল্টা ঘৃণা নয়। যতি আক্রমণ ধেয়ে আসুক, যতই আপনারা আমাকে পাপ্পু বলে কটাক্ষ করুন, আমি আপনাদের প্রাপ্য মর্যাদা ফিরিয়ে দেব।
কোনও সন্দেহ নেই, রাহুল নিজে এটা মেনে চলেন। অতীতেও বেশ কয়েকবার দেখা গেছে, তাঁর দলের কোনও নেতা প্রধানমন্ত্রীকে নোঙরা ভাষায় আক্রমণ করলে তা মেনে নেননি রাহুল। তিনি যে এই জাতীয় আক্রমণ পছন্দ করছেন না, তা বেশ কড়াভাবেই বুঝিয়ে দিয়েছেন। হয়ত সেই কারণেই তাঁর দলের নেতারাও অনেকটাই সংযত। তাঁরাও জানেন, সমালোচনা যদি শালীনতা ছাড়িয়ে যায়, তাহলে রাহুল মোটেই ভালভাবে মেনে নেবেন না।
এটাই একজন নেতার আচরণ হওয়া উচিত। তিনি নিজে সংযত থাকলে, তাঁর দলের নেতারা সংযত হতে বাধ্য। তাই সেই রাহুল যদি ঘৃণার বদলে শ্রদ্ধা ফিরিয়ে দেন, সেটা ভারতীয় রাজনীতিতে একটা ভাল দৃষ্টান্ত হিসেবেই থেকে যাওয়ার কথা। কিন্তু মুশকিলটা করে ফেললেন শেষ বেলায় এসে। প্রধানমন্ত্রীকে আলিঙ্গন করে আসার পরেই কার উদ্দেশে চোখ টিপলেন কংগ্রেস সভাপতি? কী বোঝাতে চাইলেন? কেমন দিলাম? এই একটা আচরণ আগের সুন্দর কাজটাকে অনেকটা ম্লান করে দিল। এমনটা না করলেও পারতেন। আপনার সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল। কাউকে শ্রদ্ধা যদি করতে হয়, তবে তা যেন আন্তরিক হয়। একবার শ্রদ্ধা জানালাম, পরক্ষণেই চোখ টিপে কটাক্ষ করলাম, তাহলে শ্রদ্ধাটা মূল্যহীন হয়ে পড়ে। এমন চমৎকার একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন, নিজেই যেন তাতে জল ঢেলে দিলেন।