সোহম সেন
দেখতে দেখতে আইএফএ শিল্ড প্রায় শেষ হয়ে গেল। কখন যে শুরু হল, কখন যে দু–খানা সেমিফাইনাল হয়ে গেল, কেউ জানতেই পারল না। ফাইনালে মুখোমুখি দুই প্রধান। তাই কাগজে দু–চার লাইন খবর বেরিয়েছে।
মানছি, বিশ্বকাপ চলছে। ঘরোয়া ফুটবলের খবর কাগজে বা চ্যানেলে তেমন জায়গা পাবে না। তাই বলে, এমন করুন অবস্থা শতাব্দীপ্রাচীন এই টুর্নামেন্টের! গত কয়েক বছর ধরেই জৌলুস কমতে কমতে একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। কারা খেলছে, কী রেজাল্ট, কোথাও কোনও তাপ উত্তাপ নেই। আর তাপ উত্তাপ নেই বলেই মিডিয়া কভারেজও নেই।
অনেকেই দায়ী করে থাকেন মিডিয়াকে। কিন্তু এই জৌলুস হারিয়ে যাওয়ার মূল দায়ী আইএফএ নিজে। এরকম একটা ঐতিহ্যশালী প্রতিযোগিতাকে হঠাৎ করে অনূর্ধ্ব ১৯ পর্যায়ে নামিয়ে আনা হল। অধিকাংশ ক্লাবে ঠিকঠাক অনূর্ধ্ব ১৯ দলটাই নেই। কাগজে কলমে একটা দল থাকলেও এখান–ওখান থেকে ভাড়া করে ফুটবলার জোগাড় করতে হয়। টুর্নামেন্টের আগে কোনওরকমে একটা দল খাড়া করতে হয়। আর অনূর্ধ্ব ১৯ হলে যা হয়! স্পন্সররাই বা এগিয়ে আসবে কেন?
কয়েকবছর আগে, যখন অনূর্ধ্ব টুর্নামেন্ট করা হল, অনেক বড় বড় আশ্বাসবাণী শুনিয়েছিল আইএফএ। বলা হয়েছিল, বার্সিলোনা, ম্যাঞ্চেস্টারের মতো দল আসবে। কোথায় বা কী? সেই সেইল আর টিএফএ।
এখন তো আইএফএ–র সভাপতি মুখ্যমন্ত্রীর দাদা। বাংলার ফুটবলে তিনি নাকি প্রাণ ফিরিয়ে আনবেন। তার চমৎকার নমুনা দেখা যাচ্ছে। আইএফএ–র সভাপতি হয়েছেন, অথচ আইএফএ শিল্ডের জন্য সামান্য স্পন্সর আনতে পারেন না? দায়িত্ব যখন নিয়েছেন, তখন দায় তো নিতেই হবে।
মুশকিলটা হল, আগে নানা ক্ষেত্রে আইএফএ–র বিরুদ্ধে প্রাক্তন ফুটবলাররাও সোচ্চার হতেন। ত্রুটিবিচ্যুতি তুলে ধরতেন। সমালোচনা করতেন। কেউ কেউ গঠনমূলক পরামর্শও দিতেন। এখন সেসব পাঠও চুকে গেছে। এখন আইএফএ–র বিরুদ্ধে কিছুই বলা যাবে না। ‘অনুপ্রেরণা’ সত্যিই বড় ভয়ঙ্কর জিনিস।