বাইচুং তো সিকিমের ভোটারই নন

রজত সেনগুপ্ত
বাইচুংকে কেন সিকিমের ব্র‌্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করা হল না, এই নিয়ে বেঙ্গল টাইমসে প্রশ্ন উঠেছে। কোন রাজ্য কাকে তাদের ব্র‌্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করবে, সেটা একেবারেই সেই রাজ্যের নিজস্ব বিষয়। আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে, মুখ্যমন্ত্রীর মর্জি। আমাদের রাজ্যে শাহরুখ ব্র‌্যান্ড অ্যাম্বাসাডর এটা দলীয় স্তরে বা ক্যাবিনেটে, কোথাও কোনও আলোচনা হয়েছে বসে মনেও হয় না। মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছেন, তাই হয়েছে। সিকিমের ক্ষেত্রেও তাই। চামলিং চেয়েছেন, তাই এ আর রহমান হয়েছেন।
কেন এ আর রহমানকে বেছে নেওয়া হয়েছে, তা চামলিং হয়ত বলতে পারবেন। কিন্তু আমার মনে হয়, বাইচুংকে না করে ঠিকই করেছেন। বাইচুং হতে পারেন ভূমিপুত্র। কিন্তু সেই ভূমিপুত্র যদি সংকীর্ণ স্বার্থে রাজ্য ছেড়ে পড়শী রাজ্যের ভোটার হয়ে যান, তাহলে তাঁকে নিয়ে বেশি আদিখ্যেতা না করাই ভাল। খেলোয়াড় বাইচুংকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু তাঁর রাজনীতিতে জড়ানো মেনে নিতে পারিনি। তিনি নাম লেখালেন শাসক দলে। লোকসভা ভোটে লড়লেন। হেরেও শিক্ষা হল না। এবার তিনি হাজির হয়ে গেলেন বিধানসভা ভোটে। সেখানেও হারলেন শিলিগুড়ি থেকে। যতদূর জানি, কোনও রাজ্য থেকে বিধানসভা ভোটে লড়তে গেলে, সেই রাজ্যের ভোটার হতে হয়। তার মানে, হিসেব অনুযায়ী বাইচুং এখন বাংলার ভোটার। যিনি সামান্য ক্ষমতার জন্য রাজ্য ত্যাগ করতে পারেন, ভোটে দাঁড়াবেন বলে অন্য রাজ্যের ভোটার হয়ে যেতে পারেন, তাঁকে ব্র‌্যান্ড অ্যাম্বাসাডর না করাই ভাল।

baichung4
বাইচুং কোন কোন ক্লাবে খেলেছেন?‌ বাংলায় মোহানবাগান জনতার অভিজ্ঞতা খুব খারাপ। তাঁরা কখনই বাইচুংকে তাঁদের ঘরের ছেলে মনে করেননি। এমনকী যে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলোয়াড়জীবনের বেশিরভাগ সময়টা কাটিয়েছেন, সেখানকার সমর্থকদের কাছেও খুব প্রিয় হয়ে উঠতে পারেননি। নাচের কম্পিটিশনের বিচারক হবেন বলে মাসের পর মাস ক্লাবের হয়ে ফুটবল খেলেননি। দলবদলের সময় এলেই দুই ক্লাবের কর্তাদের নাচিয়েছেন, নিজের দর বাড়িয়েছেন। ভারতীয় ফুটবল থেকে আই এস এল সব জায়গায় কার্যত সিন্ডিকেট চালিয়েছেন। খেলোয়াড়দের অ্যাসোসিয়েশন খুলেছেন, যারা খেলোয়াড়দের স্বার্থে লড়াইয়ের বদলে কর্তাদের হয়ে দালালি করে।
সবমিলিয়ে বাইচুংয়ের ভাবমূর্তি মোটেই ভাল নয়। সিকিমের মানুষও বাইচুংকে খুব একটা ভাল নজরে দেখেন বলে মনে হয় না। আচ্ছা, এত বছরে বাইচুংকে কখনও সিকিমের পর্যটন নিয়ে বলতে শুনেছেন। সেই রাজ্যে যাওয়ার আবেদন জানাতে শুনেছেন?‌ সিকিমের মানুষ, এই গর্ববোধটা কি বাইচুংয়ের মধ্যেও আছে?‌ তাহলে খামোখা তাঁকে নিয়ে মাতামাতি হবেই বা কেন?‌ মনে রাখবেন, আমি–‌আপনি বাইচুংকে যতটা চিনি, পবন চামলিং তার থেকে ঢের বেশি চেনেন। তাই তিনি যা করেছেন, ভেবে চিন্তেই করেছেন।
(‌ওপেন ফোরাম। পাঠকের মক্তমঞ্চ। এই বিষয়ের উপর আপনিও লিখতে পারেন। পক্ষে বা বিপক্ষে আপনার মতামত পাঠাতে পারেন। বেঙ্গল টাইমসের পাতায় উঠে আসুক সুস্থ বিতর্ক। লেখা পাঠানোর ঠিকানা:‌ bengaltimes.in@gmail.com)‌

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.