‘অ্যামাজন অভিযান’ – একটি রিভিউ

 সুমন সরকার 

মুক্তি পেয়েছে ‘ অ্যামাজন অভিযান’ । কলকাতায় একটি হলের সামনে দেখলাম দেবের ফ্যানক্লাব ‘দেবদা দেবদা’ বলে চিৎকার করছে , একটি ঘোড়ার গাড়ি , ব্যান্ডপার্টি জুটিয়েছে , প্রত্যেকের গায়ে ‘অ্যামাজন অভিযান’ লেখা টিশার্ট । যে বাঙালি দেবের ফ্যান তাঁকে কিন্তু সহজেই চিনতে পারা যায় । যেমন ওঁদের ‘স’ এর দোষ থাকবেই । হাঁটাচলার মধ্যেও একটা ব্যাপার আছে । শুনলাম বাংলা ‘পাত্র-পাত্রী চাই’ মার্কা একটি অনলাইন সাইটে একটি বোতাম আছে – ‘আপনি কি দেবের ফ্যান ?’ সমীক্ষা বলছে দুজনেই দেবের ফ্যান হলে নাকি বিলা ম্যাচ হয় দুজনের , ডিভোর্সের চান্স কম । সেই উত্তর কলকাতার হলের বাইরে ছবির পোস্টারে দেখা যাচ্ছে নায়ক দেবের সামনে একটি অ্যানাকোনডা জিভ বার করে কিছু বলতে চাইছে । নায়ক বড় বড় চোখ মেলে আছেন তাঁর দিকে । কি জানি হয়তো সাপবাবুকে জিজ্ঞাসা করবেন – ‘ হাংরি কেয়া !’ এই সময় মনে আসে আমাদের সময়কার হায়ার সেকেন্ডারির বাংলায় শরৎচন্দ্রের লেখা ‘নৈশ অভিযান’ এর একটি লাইন – ‘কি সাপ ভাই !’ যাইহোক , হলের বাইরে সেই বিশালাকার পোস্টারে দেবের উপর কেজি কেজি গাঁদা ফুলের মালা পরানো হয়েছে । কেমন লাগে না ! এতো বড় সাপ হিরোর নাকের ডগায় জিভ বার করে আছে , নায়কের হাতে একটা আপেল কাটার ছুরি , আর নায়কের ছবির উপর মালা ! আর একটা পোস্টারে দেখা যাচ্ছে একটি বিশাল কুমির গুলি খাবে বলে প্রচুর লালা বার করে বিরাট হাঁ করে আছে , আর নৌকায় দণ্ডায়মান নায়ক দর্শকের দিকে তাকিয়ে আছে , কিন্তু বন্দুক তাক করেছেন কুমিরের দিকে । আমি যে মফঃস্বলের হলে ছবিটি দেখতে গেছিলাম সেখানে দেখলাম , প্রথম যে মালাটি নায়কের ছবিতে পরানো হয়েছে সেটি রজনীগন্ধার । হলের লোকজন পরে বুঝতে পারেন যে একই ফ্রেমে জিভ বার করা অ্যানাকোনডা সাপ এবং নায়ক , এবং নায়কের ছবির উপর রজনীগন্ধার মালা ভুল অর্থ বহন করতে পারে । তাই একটি রজনীগন্ধার উপর বেশ কয়েকটি গাঁদার মালা ঝুলিয়ে ভুল অর্থ শুধরে দেবার প্রয়াস অবশ্যই প্রশংসার দাবী রাখে । রজনীগন্ধার মালাটা ফেলে দিলেও ল্যাঠা চুকে যেতো , কিন্তু হাজার হোক মালাটা পয়সা দিয়ে কেনা, আগে মাল পরে মালা !

ছবির মূল চরিত্র তিনজন শংকর ( দেব ), অ্যানা, মার্কো। শংকর বুনিপ মেরেও সরকারী চাকরী, কিমবা ক্যাশ কিছুই পায়নি। গেরামের ইস্কুলে পড়ায়। বিধবা মা। বাংলা ছবিতে গ্রামের বিধবা মায়েদের কাশি হয়, বাইটোকাফেও কমে না। মা কাশতে কাশতে ছেলেকে সংসার করতে বলেন। এদিকে ছেলে সাহেবি বই পড়ে। সেই পড়াশুনার কুপ্রভাবে দিনেরবেলায় গাছের তলায় ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে, সে পাহাড়ের উপর দিয়ে ছুটছে, পিছু নিয়েছে চারটে নেড়ি কুত্তা থুড়ি প্যানথর। কী করবো বলুন, ১৯ কোটির ছবির স্পেশাল এফেক্ট দেখে আমি ভাবলাম কালো নেড়ি তাড়া করেছে। শংকরের গেরামে এক ইতালিয়ান মেম সাহেব অ্যানা হাজির হয়। শংকরের মা ভাবে মেম বউমা! অ্যানা বাংলাও বলে। বাংলা বলার ব্যাপারে অ্যানা এবং শংকর দুজনেই আর কি… বুঝতেই পারছেন। ওই দশে দুই আর কি! অ্যানার বাপ মার্কো ‘এল ডোরাডো’ বা সোনার শহর আবিষ্কার করতে অ্যামাজন অভিযানে যায়। কিন্তু, মাঝপথে বোট ডুবে যায়, এবং একমাত্র মার্কো বেঁচে যায়। ‘এল ডোরাডো’ ম্যাপ ইত্যাদি বোতল বন্দী হয়ে জলের তলায় থেকে যায়। ফেরার পথে মার্কোকে বেশ কিছু জাগুয়ার ঘিরে ধরে গিলবে বলে। কিন্তু, হঠাৎ চারিদিক থেকে কিছু অতীব সুন্দরী মেয়ে হাতে তীর-ধনুক নিয়ে হাজির হয়ে, মার্কোর চারিদিকে তীরের প্রাচীর গড়ে দেয়। জাগুয়ারগুলো পাতলা হয়ে যায়। এক পাল জাগুয়ার দেখে মার্কো ঠিক ছিল, কিন্তু একসঙ্গে অতোগুলো সুন্দরী মেয়ে দেখে সে ফিট হয়ে যায়। দেশে ফিরে সারাক্ষণ মাল ও ফ্রাসটু খায়। মেয়ে বাবার এই দুঃখ দেখতে পারছে না। সে শংকরকে নিয়ে বাবা ওরফে পাপা সহ আবার অ্যামাজন অভিযান করতে চায়। শংকর বুঝতে পারে বিদেশে ওঁর বাজার আছে, দেশে কেউ পাত্তা দেয় না। সে অ্যানার সঙ্গে বিদেশে পাড়ি দেয়। মা কাশতে কাশতে দুগগা দুগগা বলেন।

amazon

খেয়েদেয়ে কাজ নেই , মেয়ে এক বাঙালি ধরে এনেছে বলে মার্কো খচে বোম । বাঙালি বলতে তিনি ভেতো এবং ভীতু বোঝেন। তাঁর ধারনা বাঙালি আমজাম অভিযান করতে পারে , কিন্তু অ্যামাজন অভিযান ! কাকা , ওখানে জলঢোঁরা নয় অ্যানাকোনডা বেরোয় , ভাম নয় প্যানথার আসে । অ্যানা বাবাকে বোঝায় – “পাপা , শংকর মিরাকেল করিয়া ঠাকেন । এর আগেও করিয়াছেন ।” অ্যানা বোঝাতে চাইছিল শংকর এর আগে বুনিপ মেরেছেন । পাপা আদ্ধেক রাজী হন । পাপা বলেন , শংকরকে উনি পরখ করে দেখবেন । তাই মাঝে মাঝেই নানান প্রশ্ন করেন । শংকর সবেতেই সঠিক উত্তর দেয় । এতে পাপা মার্কো আরও খচে গিয়ে বলেন – ” ভূগোলের ছাত্রবন্ধু পড়ে এইসব প্রশ্ন সবাই পারে । আসল জায়গায় দেখবো কি করতে পারো ।” তিনি শংকরকে মাল অফার করেন । ঢেঁকি স্বর্গে গিয়েও ধান ভাঙে , বাঙালি অ্যামাজনে গিয়েও জ্ঞান দেয় । কানা হয়ে গেলেও সে দর্শন আওরায় । ‘মাল খাবেন না , ধূমপান করবেন না’ – মার্কোকে শংকর এসব বোঝাতে গেলে মার্কো বলে , বেশী পেঁয়াজি করো না ।

শুরু হয় অভিযান । চমৎকার কিছু দৃশ্য আমরা দেখতে পাই পর্দায় । ডিসকভারি চ্যানেলের সঙ্গে কমন পাই । মার্কো ঘাঘু লোক , এবং নিশ্চয় শাসক দলের ঘনিষ্ঠ । যখন যা চাইছে ঘোড়া , নৌকো লোকে দিয়ে দিচ্ছে । সিনেমা ধীরে ধীরে এগোচ্ছে । এইধরনের সিনেমা বুঝতে জরুরি বাংলা পাদটীকা , যেটা ডিরেক্টর কমলবাবু মাঝে মাঝেই দিয়ে যাচ্ছেন । কারন , এই ছবিতে বাংলা নাকি মাত্র ৩০% । বাকি স্প্যানিশ , ইতালি , দেববাংলা , অ্যানাবাংলা , এসব চলছে । কিছু দর্শক হলের ভেতরে রাগে গজগজ করতে থাকে – ‘শালা বাংলা বই দেখবো বলে এলাম । ইংরেজি সিনেমার টিকিট দিয়ে পয়সা খিঁচে নিলো ।’

ছবিতে যতক্ষণ স্পেশাল এফেক্ট তথা VFX আসছে না ঠিক আছে। যেই আসছে , মনে হচ্ছে অ্যামাজন অভিযানের মধ্যে জাঙ্গল বুক শুরু হয়ে গেল। মার্কো, অ্যানা , শংকর একটি জায়গায় পৌছায়। সেখানে কিছু সাহায্য মেলে। কিন্তু, একটি জাগুয়ার এসে একটি মেয়েকে মেরে ফেলে । আমাদের বাড়িতে বিড়াল ঢোকে , ওঁদের ওখানে জাগুয়ার । সেই মেয়ের হবু বর অন্ধকার জঙ্গলে টর্চ ছাড়াই জাগুয়ার মারতে ছোটে । শংকর ও সঙ্গে যায় । জাগুয়ার হবু বরকে মেরে ফেলে । তারপর শংকরকে অ্যাটাক করে । শংকরের হাত থেকে বন্দুক পড়ে যায় । সে ভুলে যায় কোমরে পিস্তল আছে । জাগুয়ার যখন তাঁকে হামি দিতে যায় , তখন মনে পড়ে পেছনে গোঁজা আছে পিস্তল । সেটি বার করে শংকর জাগুয়ার নিধন করে । শংকর বউনি করে ।

রাস্তায় বেশ কিছু জায়গায় হল্ট নেয় ওঁরা । আগেই বলেছি মার্কোর হেবি লাইন । যেখানেই যাচ্ছে খাতির পাচ্ছে , আর একটা করে কেনো ( নৌকো ) ম্যানেজ করে নিচ্ছে । ঠিক যেখানে আগের বার বোট ডুবেছিল সেখানে জলের নীচে নেমে পড়ে সবাই , এবং বোতল বন্দী ম্যাপ উদ্ধার হয় । শংকর ইলমাছের শক খায় । আমি বেশ কিছুক্ষণ হল ঘুমিয়ে পড়েছিলাম । শংকর ইলমাছের শক খেতেই আমার ঘুম ভাঙে । ওঁরা এগিয়ে চলে ।

শংকর এবং দলবল যেসব জায়গায় যাচ্ছে কঠিন কঠিন তাঁদের নাম । পেদরো ফুস্কা দা ঘুগনি , লা চুড় মসিয়ো মুড় এমন সব জায়গার নাম ও তাঁদের ইতিহাস পাদটীকার মতন জুড়ে যাচ্ছেন কমল বাবু । হলের লোকজন হাঁপিয়ে উঠছে । একদিকে জাগুয়ার – প্যানথর হালুম হালুম করছে , একদিকে র‍্যাটেল স্নেক ঝুমঝুম করছে , অন্যদিকে শংকর ভালো বাংলা বলার আপ্রাণ চেষ্টা করছে , অ্যানা ইতালিয়ান বাংলা বলছে , কেউ স্প্যানিশ বলছে , মার্কো ভোজপুরি ইতালিয়ান কপচাচ্ছে , সঙ্গে আবার কমলবাবুর পাদটীকার বাংলা । দর্শক পাগল হয়ে যাচ্ছে । ভাই যাবো টা কোন দিকে! শুনবো না বুঝবো !

অভিযানে যেতে সকলেই সাদা পোশাক পরেছেন । এবং জঙ্গলের রাস্তায় একটুও ময়লা লাগেনি , একবারও পাখিতে বা বাদুড়ে হাগেনি । কিমবা নোংরা হলেও সার্ফ এক্সেল ছিল , দাগ আচ্ছে হে । যদিও ছবির শেষের দিকটায় জামাকাপড় ময়লা হয় , নিশ্চয় গুঁড়ো সাবান ফুরিয়ে গেছিল ।

dev

এবার হাজির হয় ছবির ভিলেন অ্যানাকোনডা । হে ঈশ্বর , আবার স্পেশাল এফেক্ট ! VFX এ বানানো সাপটা যখন এগিয়ে আসছে , আমার সেই ছোটবেলার সাপবাজির কথা মনে আসছিল । একটা বড়িতে আগুন দিলে , বিচ্ছিরি গন্ধ আর ধোঁয়া সহ একটা কেলে ন্যাড়ের মতন সাপ বেরোতো । সাপটা মার্কোকে মেরে ফেলে । শংকর বলে – ‘বদল নয় আমি বদলা চাই ।’ ব্যাঙের বিষ জোগাড় করে শংকর লস্যি বানায় । বিশাল সেই সাপটিকে গাছে পাটের দড়ি দিয়ে জড়িয়ে মেরে ফেলে । কিজানি শংকরের এইসব আয়োজন দেখে সেই সাপ বেচারি হার্টফেলও করতে পারে । ভিলেন এই ছবিতে অতিথি শিল্পী ।

ছবি আবার ধীর গতিতে এগোতে থাকে । ‘এল ডোরাডো’ যাবার ম্যাপ হাতে আসে শংকরের । হলে বেশ কিছু লোকের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে । তারা আওয়াজ দেয় – ‘এবার শেষ কর’ । লোকে বুঝতে পারে এবার বই শেষ হবে , কিন্তু বই শেষ হতেই চায় না । শংকর এবং অ্যানা অবশেষে ‘এল ডোরাডো’ আবিষ্কার করে । কিন্তু, তাতেও শান্তি নেই ! কোথা থেকে একপাল প্যানথর হাজির হয় । জঙ্গল বুক এর বাঘিরার জাতভাইরা ঘিরে ধরে ওঁদের । ভাই , আবার স্পেশাল এফেক্ট ! আবার কেন ! কম্পিউটার জানি বলে সবসময় শো অফ ! এই জন্যই বাঙালির কিছু হল না ! আবার কিছু সুন্দরী মডেলরা তীর ধনুক নিয়ে হাজির । প্যানথরের দল তীরের ভয়ে কেটে পড়ে । সেইসব সুন্দরী মডেলরাই মার্কোকে একবার বাঁচিয়েছিল । কিন্তু, ওঁরা কথা বলে না , শুধু একই পোজে তীর ধনুক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে । ওঁদের মধ্যে একজনকে আমার ভালো লেগে যায় । নামটা জানলে ফেসবুকে রিকু পাঠাতাম । ছবি শেষ হয় । আমার পেছনে এক কাকিমা কাঁদো কাঁদো হয়ে বলেন – ‘শংকরের সঙ্গে অ্যানার মিল দিলো না ।’ আমি মনে মনে বলি – ‘এই ছবিতে মিল নেই , সবই গরমিল’ । একটা প্রশ্ন থেকেই যায় । শংকর এবং অ্যানা ফিরলো কিভাবে ! কারন , একমাত্র ব্রিজটা ভেঙে গেছে , নৌকা গুলো গুপি হয়ে গেছে , খাবার নেই , জল খেলে বমি হচ্ছে ।

আমি শেওড়াফুলির ‘উদয়ন’ হলে ছবিটি দেখতে গেছিলাম । গিয়ে দেখি হাউসফুল । একটা লোক আমায় এসে বলে – ‘দাদা , আমার শরীর খারাপ লাগছে , বই দেখবো না , আমার টিকিটটা নেবেন ?’ আমি ভাবলাম , ছবি দেখার আগেই শরীর খারাপ হয়ে গেলো ! চারিদিকে বিলা ভিড় । কচি কাচা , নতুন বিয়ে হওয়া , নতুন প্রেম হওয়া কাপেল , মামী , মাসি , মা , কাকা সবাই এসেছেন । এক দাদুও এসেছেন – ‘আগে উত্তমের বইতে সকালে এসে টিকিট কেটে যেতাম , এখন দেবের বইতে কাটি’ । বড়দিন অবধি শো হাউসফুল । মফস্বলে টাইগার জিন্দা নেই ঝিমিয়ে পড়েছে , বুনিপ এবং বোয়া ( অ্যানাকোনডা ) মেরে খ্যাত শংকর জিন্দা হ্যায় । কিন্তু, কেস হল লোকে ছবি দেখতে গিয়ে প্রায় কিছুই বোঝেনি । মা-মাসি-কাকিমা বাহিনী মুখ গোমড়া করে হল থেকে বেরিয়েছেন । ওঁরা ভাবছেন সিরিয়াল মিস হয়ে গেলো ! বাচ্চাদের সঙ্গে গার্জেনরা এসেছিলেন । তারা কমলবাবুর পাদটীকার উপর আবার পাদটিকা দিচ্ছিলেন । আমার পাশেই এক বাবা তাঁর পুত্রকে নিয়ে এসেছিলেন । তিনি কিছুক্ষণ পর পর ছেলেকে জিজ্ঞাসা করছেন – ‘বাবু , বুঝতে পারছিস তো ?’ তারপর তিনি বোঝাচ্ছেন ।

kamaleswar

বাড়ি ফিরছি , রাত ৮ টা বাজে , রাস্তা ফাঁকা । হঠাৎ আমার পথ আটকালো পাড়ার কয়েকটা নেড়ি । আমার যেন মনে হল , সেই এক পাল কালো প্যানথর রাস্তা আটকেছে । হয়তো আমায় উদ্ধার করতে কিছু তীর-ধনুক ওয়ালা সুন্দরী মডেল আসবে । ওসব সিনেমায় হয় । হ্যাট , হ্যাট বলতেই নেড়িগুলো রাস্তা ছেড়ে দিলো । আমার চোখ-মুখ দেখেই ওঁরা বুঝেছিল যে আমি ‘অ্যামাজন অভিযান’ থেকে ফিরছি ।

সভ্যতার একটা বড় সুবিধা কি জানেন ? মানুষই সিনেমা বানায় , আর মানুষই দেখে । ভাগ্যিস বাঘ , ভালুক , অজগর , চিতা , বাইসন , গণ্ডার এরা হলে গিয়ে সিনেমা দেখে না । যদি দেখত কি হতো ভাবুন ! আপনার পাশে একটি প্যানথর বসে আছে , আর সে কিসব দেখছে । আপনার সামনের দুটো রো পরেই একটি বিশাল সিংহ বসে বসে কেশর চুলকচ্ছে আর সিনেমা দেখছে । একটা গোটা রো জুড়ে শুয়ে শুয়ে বই দেখছে অ্যানাকোনডা । এঁদের কতটা রাগ ধরতে পারে ‘অ্যামাজন অভিযান’ বা ‘চাঁদের পাহাড়’ দেখে , ভেবেছেন কখনো ! ছবিটি অবশ্যই হলে গিয়ে দেখুন । ।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.