পোস্টারে ছবি নেই। এই কারণে দুই বিখ্যাত অভিনেতা দুই পরিচালকের সঙ্গে আর কাজ করেননি। সেখানে প্রসেনজিৎ একেবারেই অন্যরকম। ককপিট না দেখলে বোঝাই যাবে না, এতে প্রসেনজিৎ আছেন। নিজেকে আড়ালে রাখতে জানেন। যেটা বাকিরা জানেন না। লিখেছেন স্নেহা বিশ্বাস।।
কীভাবে আড়ালে রাখতে হয়, সেটা জানতে হয়। এবং প্রসেনজিৎ সেটা জানেন। ককপিট দেখার পর এমনটাই মনে হল।
ছবির পোস্টার জুড়ে দেব। সঙ্গে কোয়েল আর রুক্মিনী। সাধারণ দর্শক জানেন, এটা দেবেরই ছবি। সঙ্গে দুই নায়িকা। কিন্তু এই ছবিতে যে প্রসেনজিৎ আছে, তা কজন জানেন? আমিও জানতাম না। ভুল ভাঙল হলে গিয়ে।
খুব বড় রোল আছে, এমন নয়। ফ্ল্যাশব্যাকে কয়েকবার ফিরে ফিরে এসেছে মুহূর্তগুলো। যেখানে দেবের বাবা হয়েছেন প্রসেনজিৎ। তিনিও ছিলেন পাইলট। বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়। বিমানের নানা অজানা বিষয় নিয়ে গল্প করতেন ছেলের কাছে। দেবও পাইলট। নানা সময়ে বাবার সেই কথাগুলো মনে পড়ে যাচ্ছে।
প্রসেনজিতের প্রতি শ্রদ্ধা বেড়ে গেল। এত ছোট্ট একটা রোল করতে রাজি হয়েছেন। এরকম উচ্চতার একজন তারকা মাত্র কয়েকটা দৃশ্যে কাজ করবেন, এমনটা ভাবাই কঠিন। বিশেষ করে ছবির নায়ক দেব। সেখানে তিনি কোনও প্রতিযোগিতায় যাননি। ছোট্ট ভূমিকাতেই নিজেকে আবদ্ধ রেখেছেন।
পোস্টারে তাঁর নাম থাকাটাই স্বাভাবিক ছিল। ‘একসঙ্গে প্রসেনজিৎ–দেব’ এমনটা প্রচার করলে মারকাটারি ব্যাপার হয়ে যেত। কিন্তু তেমনটা হয়নি। কারণ, প্রসেনজিৎ চাননি। তিনি নিঃশব্দে, আড়ালেই থাকতে চেয়েছেন। তাই পোস্টারে তাঁর ছবি নেই। নামও চোখে পড়েনি।
জানি না, আর কজন এই মহানুভবতা দেখাতে পারবেন। শোনা যায়, রাজেশ খান্না নাকি পরিচালকদের শর্ত দিতেন, সব কটা গান তাঁর লিপে থাকতে হবে। পোস্টারে নাম বা ছবি না থাকার জন্য কত বড় বড় তারকাকে ক্ষুন্ন হতে দেখেছি। দজুন অভিনেতাকে জানি, পোস্টারে ছবি ছিল না বলে তাঁরা সেই পরিচালকদের সঙ্গে আর কখনও কাজ করেননি। সেখানে প্রসেনজিৎ সত্যিই ব্যতিক্রমী। মানুষ হিসেবেও তিনি অনেক বড় মাপের।