সৌমিত্র আবার নায়ক কবে হলেন !

নন্দ ঘোষের কড়চা

(যত দোষ, নন্দ ঘোষ। এতদিন সবাই সব ব্যাপারে নন্দ ঘোষকেই দায়ী করে এসেছেন। এবার তাঁর পালা। এবার তিনি হাজির অন্যের দোষ খুঁজতে। একেকদিন তাঁর নিশানায় একেকজন। আজ তাঁর নিশানায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। )

nanda ghosh logo

অনেকেই মনে করেন, বাংলা সিনেমায় উত্তমকুমারের পরেই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের স্থান। অনেকে আবার তাঁকে উত্তকুমারের ওপরে রাখেন। কিন্তু ভালভাবে বিচার করে দেখলে সৌমিত্র উত্তমের ত্রিসীমানায় আসতে পারেন না। কোনোভাবেই না।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় একজন বুদ্ধিজীবী। সিনেমা ছাড়াও নাটক, কবিতা ইত্যাদি অনেক কিছু করেন। এই সব ভেবে তাঁর ভক্তরা খুব অহংকার করেন। কিন্তু আসল জায়গা, মানে সিনেমায় অভিনয়ের ক্ষেত্রেই সৌমিত্র লবডঙ্কা। উত্তম তো বটেই, শমিত ভঞ্জ- শুভেন্দুরাও তার থেকে অনেক এগিয়ে আছেন। শুধু এরাই কেন, হাল আমলের প্রসেনজিৎ বা দেবও সৌমিত্রর থেকে অনেক বেশি হিট ছবি উপহার দিয়েছেন।

soumitra5

আসলে সত্যজিৎ রায়ের সিনেমার বাইরে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে খুঁজে পাওয়া যায় না। সৌমিত্রবাবু বিখ্যাত হয়েছেন, কারণ তিনি সত্যজিৎ রায়ের দুর্দান্ত সিনেমাগুলোতে কাজ করেছেন। সত্যজিৎ রায় তাঁকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিয়েছেন। অন্য পরিচালকদের ক্ষেত্রে তিনি নিতান্তই সাধারণ। সত্যজিৎ তাঁকে বেছেছেন, কারণ তাহলে কেউ আর সৌমিত্রর ছবি বলবে না, সবাই বলবে সত্যজিতের ছবি।
তিনি না পারেন ভিলেনের রোল করতে, না পারেন কমেডি করতে, না পারেন প্রেম করতে। নাচানাচি বা মারামারিও পারেন না। একবার ভেবে দেখুন, একজন বিখ্যাত নায়ক কিন্তু তিন ভুবনের পারে ছাড়া কোনও রোম্যান্টিক সিনেমা হিট করেনি? নায়িকাদের সামনে পড়লেই সৌমিত্রর হাঁটু কাঁপতে থাকে।

soumitra6এমনিতে বুদ্ধিদীপ্ত, কিন্তু প্রেমের দৃশ্যে তিনি ক্যাবলা। পরিচালকরাও জানতেন সৌমিত্রকে দিয়ে প্রেম হবে না। তাই তাঁকে বুড়ো মাস্টার, বোকা ব্রাহ্মণ, অসহায় পিতা, আদর্শবান ডাক্তার ইত্যাদি রোল দিতেন।
কোনি সিনেমায় সাঁতার কোচের ভূমিকায় সৌমিত্র দারুন অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু যদি গল্পটা অন্যরকম হত, যদি দেখা যেত কোচ তাঁর ছাত্রির প্রেমে পড়েছে– অবধারিতভাবে সৌমিত্র ঝোলাতেন।
নায়ক মানে স্বপ্নের মানুষ। যাকে নিয়ে মেয়েরা স্বপ্ন দেখবে। যে অভিনেতা সেই স্বপ্ন দেখাতে পারেন না, তাঁকে উত্তম কুমারের পাশে বসান যায় না।

(‌নন্দ ঘোষের কড়চা। নিছক একটি মজার কলাম। এটিকে সেভাবেই দেখুন। সৌমিত্রবাবুর প্রতি আমরাও শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু নিছক মজার দৃষ্টিকোণ থেকে এই প্রতিবেদন। সৌমিত্রবাবু নিজেও হয়ত এমন সমালোচনা পড়লে হেসে ফেলতে পারেন। )

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *