ক্ষমা চাইছি
কখনও কখনও অতীতের দিকে তাকাতে ইচ্ছে করে। অনেক ভাল স্মৃতি যেমন ভিড় করে, তেমনি ছোট ছোট কিছু ঘটনা একটা অপরাধবোধকে নাড়া দিয়ে যায়। তেমনই একটা ঘটনার কথা বেঙ্গল টাইমসে তুলে ধরতে চাই। হয়ত অনেকের জীবনেই এমনটা ঘটে থাকতে পারে।
আমরা দুই বন্দু একবার একটা কাজে মাস্টার মশাইয়ের কাছে গিয়েছিলাম। মাস্টারমশাই মানে রিটায়ার করা মাস্টার মশাই। পুরানো ছাত্ররা এলে স্যারদের হয়ত ভালই লাগে। সেদিন স্যার খুব আপ্পায়ন করলেন। অনেক গল্প হল।
এদিকে বৃষ্টি নামল। রাত বাড়ছে। বাড়িও ফিরতে হবে। আমরা কেউই কিন্তু ছাতা নিয়ে যাইনি। বৃষ্টি হতে পারে, এমনটা বুঝতেও পারিনি। এখন কী করা যায়? এতটা রাস্তা, ভিজে ভিজেও ফেরা মুশকিল। স্যার বোধ হয় আমাদের সমস্যাটা বুঝতে পারলেন। তিনি নিজেই বললেন, যাওয়ার সময় ছাতাটা নিয়ে যেও। আমরা কিন্তু কিন্তু করলাম। সেই ছাতা নিয়েই ফিরলাম।
ফেরার সময় দুই বন্ধু মিলে ঠিক করলাম, দু-তিন দিনের মধ্যেই ছাতাটা ফেরত দিতে আরও একবার স্যারের বাড়ি যাব। কিন্তু যা হয়! সেও ব্যস্ত হয়ে পড়ল, আমিও আজ যাব, কাল যাব, এই ভেবে গড়িমসি করলাম। এসব ভাবতে ভাবতে বর্ষাকালই ফুরিয়ে গেল।
লজ্জায় আজও সেই ছাতা দিতে পারিনি। মাস্টারমশাই মুখ ফুটে কখনও কিছু বলেননি। হয়ত এতদিনে ভুলেও গেছেন। কিন্তু রাস্তায় তাঁর সঙ্গে দেখা হলেই মনে পড়ে যায়। কেমন একটা অস্বস্তিতে পড়ে যাই। এই লেখার মাধ্যমে স্যারের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
এই জন্যই বলে, কাউকে ছাতা দিলে, সেই ছাতা আর ফেরত পাওয়া যায় না। ছোটবেলায় বিশ্বাস করতাম না। কিন্তু আমার নিজের জীবনে যে একটা ছাতা এতটা অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে, কে জানত!
বরুণ ঠাকুর
বেদিয়াপাড়া, দমদম
(আপনিও লিখুন..
এই বিভাগ পাঠকদের মুক্তমঞ্চ। আপনিও এখানে মন খুলে নিজের কথা লিখতে পারেন। পুরানো কোনও স্মৃতির কথা তুলে আনতে পারেন। কারও কাছে নিজের কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে পারেন। শৈশব, কৈশোরের টুকরো টুকরো স্মৃতি অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেন। এমনকি কোনও ঘটনার জন্য অনুতপ্ত হলে, তা এখানে লিখে মনকে কিছুটা হালকা করতে পারেন। চেষ্টা করুন, ১৫০-২০০ শব্দের মধ্যে নিজের অনুভূতিকে মেলে ধরতে। যাঁরা গুছিয়ে লিখতে পারেন না, তাঁরাও হীনমন্যতায় ভুগবেন না। আপনি আপনার মতো করে লিখে পাঠান। আমরা সাজিয়ে নেব। লেখা পাঠানোর ঠিকানাঃ bengaltimes.in@gmail.com)