ধন্যবাদটাও জানানো উচিত

শিখী চট্টোপাধ্যায়

চারিদিকে শুধুক’ দিন ধরে সব বাজে সব খারাপ খবর। মনটাও যেন কেমন শীতকালের আবহাওয়ার মত ভারী ভারী। সবই নাকি খারাপ হয়ে যাচ্ছে। বিজয়া সারতে গিয়েও একই কথা –এই সময়টা নাকি খুবই খারাপ, ভালো কিছুই নেই। আরো খারাপ দিন আসছে, খারাপ মানুষে ছেয়ে যাবে সমাজ। শুধুই হাহুতাস।

kolkata police
বাড়ি ফিরতে একটু দেরিই হয়ে গেল। রাসবিহারি মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি। একলা মেয়ে, একটু ভয়ভয়ই করছিল। আমার শহরের রাতটা নাকি ইদানিং কালে খুব একটা নিরাপদে নেই; যাদের কাঁধের ওপর ভরসা করে শহরের নিরাপত্তা, তারাও নাকি ততটা নিরাপদ নয়।
ওই তো একটা ট্যাক্সি আসছে – ট্যাক্সিওয়ালা দাদা যেন দেবদূতের মত জিজ্ঞাসা করছে কোথায় যাবেন । যেই না বললাম যাদবপুর., এগিয়ে গিয়ে আরেক পার্টিকে বলল কোথায় যাবেন। বোধ হয় তার স্থানটাও ( নাকি প্যাসেঞ্জারকে) ট্যাক্সির পছন্দ হল না। আরেকটু এগিয়ে গেল। দেবদূতকে নিমেষে যমদূতের মতো মনে হল- নাহ, এ শহরে কোনো সিস্টেম নেই।
ভাবতে ভাবতেই এক ট্রাফিক সার্জেন্ট এগিয়ে গিয়ে ট্যাক্সিটাকে ধরল ।প্যাসেঞ্জারকে না বলার কারণ কী –জিজ্ঞেস করতে শেষে তিনি বললেন তাঁর ট্যাক্সিটাই নাকি খারাপ। কি সিস্টেম! খারাপ ট্যাক্সি তারও আবার প্যাসেঞ্জার পছন্দ –অপছন্দ । যেন এ বাজারে আজও পাত্র যতই খারাপ হোক পাত্রীকে অতুলনীয় হতে হবে।“হিরের আংটি বাঁকা” বলে যেন ট্যাক্সিটি প্যাসেঞ্জারকে নাকচ করেছে। সাহস করে পুলিশটির কাছে এগিয়ে গিয়ে নাকচের কারণ জিজ্ঞাসা করলাম।
kolkata police4
উত্তর শুনে অবাক হয়ে বললাম উনি খারাপ ট্যাক্সি নিয়েও দুজনকেই নাকচ করেছেন ?? আরেক নাকচ পাত্রী থুড়ি প্যাসেঞ্জারও আমার সাথে সহমত পোষণ করলো। যাই হোক সার্জেন্ট ভদ্রলোক, হ্যাঁ ভদ্রলোকই বটে, দুই নাকচ হওয়া পাত্রীকে পাত্র অর্থাৎ ট্যাক্সি জুটিয়ে দিলেন। আমার নম্বর অবশ্য পরে এল কারণ আমি অভিভাবহীন ছিলাম একা। আরেক নাকচ পাত্রীর অভিভাবক ছিল। তার দৃঢ় অভিভাবকের দরকার।
আর হ্যাঁ, পুলিশকে যদি বাজে কাজের জন্য গালাগালি দিতে পারি, তবে ভালো কাজের জন্য মুক্ত কন্ঠে ধন্যবাদ জানাতে পারি –ধন্যবাদ ।।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.