এক মঞ্চে সভা নয় কেন ?

কৃষ্ণেন্দু বরাট

বামপন্থীরা অদ্ভুত এক ছুঁৎমার্গে ভোগেন। জলে নামব, কিন্তু চুল ভেজাব না।কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করব, কিন্তু মুখে স্বীকার করব না। ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক শক্তি, যারা কেন্দ্রের অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে – এই জাতীয় গোল গোল কথা বলেই চলেছেন বাম নেতারা। কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী জোট হয়েছে, একথা বলতে অসুবিধা কোথায় ?

এই ‘ধরি মাছ, নাই ছুঁই পানি’ নীতিটাই হয়ত ডোবাতে পারে জোটকে। ঘুরিয়ে নাক দেখানোর দিন আর নেই। সহজ কথা, তৃণমূলকে হারাতে গেলে, জোট বাঁধতে হবে। যতই ঘুরিয়ে বলুন, মানুষ জানে বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট হচ্ছে। জটিল জটিল কথা বলে এই সহজ ব্যাপারটাকে অহেতুক প্যাঁচালো না করলেই নয় ?

adhir3

আড়াই দশক আগের কথা। প্রধানমন্ত্রী ভিপি সিংকে নাগরিক সংবর্ধনা দিয়েছিলেন অশোক সেন। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল জ্যোতি বসুকে। আমন্ত্রিত ছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ীও। দুজনেই এসেছিলেন। কে সেই পটভূমি মনে রেখেছে ? এখনও শুনতে হয় শহীদ মিনারে বাজপেয়ির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন জ্যোতি বসু। এক মঞ্চ থেকে নাকি সিপিএম আর বিজেপি সভা করেছিল।
তাহলেই বুঝুন, একটা অনুষ্ঠানে দুজন মিলিত হয়েছিলেন। সেই নিয়ে এখনও কথা শুনতে হয়। তাই যতই ঘুরিয়ে বলুন, যতই মানুষের জোট বলুন, সেই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট, এটাই প্রচার হবে। ভবিষ্যতে তো হবেই। এখনই হচ্ছে।

cpm4
জোটই যখন করছেন, তখন এক মঞ্চ থেকে প্রচার হতে বাধা কোথায় ? হ্যাঁ, জড়তা আস্তে আস্তে কাটছে। কং প্রার্থীদের হয়ে মিছিল করছেন বাম নেতৃত্ব। কিন্তু বাম কেন্দ্রে এখনও সেভাবে দেখা যাচ্ছে না কং নেতৃত্বকে। এই দূরত্ব যেভাবেই হোক, কমাতে হবে। জোটকে যদি নিচুতলায় নিয়ে যেতে হয়, তাহলে এক মঞ্চ থেকে প্রচারটা খুব জরুরি। এবং সেটা ব্লক স্তরে নয়, একেবারে সর্বোচ্চ স্তরে। এক মঞ্চ থেকে ডাক দিতে হবে সূর্যকান্ত মিশ্র ও অধীর চৌধুরিকে। এমনকি দরকার হলে রাহুল গান্ধী ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। জোট যখন করেই ফেলেছেন, তখন আর কোনও ছুঁৎমার্গ না রাখাই ভাল।
জোট যেমন সময়ের দাবি ছিল। তেমনি এই ছুঁৎমার্গ ঝেড়ে ফেলাটাও সময়ের দাবি।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.