অনেক পিছিয়ে বামেরা তৃতীয়, এটাই ভবিতব্য

সরল বিশ্বাস

ইংরাজিতে একটা চালু কথা আছে, উইশফুল থিঙ্কিং। অর্থাৎ, আমি কী চাই। এবারের লোকসভা ভোটে এই বাংলায় সেই কথাটা যেন আরও বেশি করে মনে পড়ে যাচ্ছে।

এবার বামেরা ঠিক কতগুলো আসন পেতে পারে?‌ যে কোনও বাম নেতত্বের সঙ্গে কথা বলুন। মনে হবে, যাদবপুরে সৃজন ভট্টাচার্য জিতে যাবেন। শ্রীরামপুরে দীপ্সিতা ধর জিতে যাবেন। যাদবপুরে সুজন চক্রবর্তী জিতে যাবেন। আর মুর্শিদাবাদে মহম্মদ সেলিম তো জিতে বসেই আছেন।

আসলে, এ হল নিখাদ এক উইশফুল থিঙ্কিং। ফেসবুকে সারাক্ষণ যা দেখছি, মনে মনে সেটাই বিশ্বাস করতে শুরু করেছি। কিন্তু বাস্তব অঙ্কটা মোটেই তেমন নয়। মুর্শিদাবাদে মহম্মদ সেলিম নিশ্চিতভাবেই দারুণ লড়াই করবেন। জিততেও পারেন। নিদেনপক্ষে দ্বিতীয় হবেন।

এর বাইরে আর কোনও বাম প্রার্থীর জেতার সুদূরতম সম্ভাবনাও নেই। এমনকী, দ্বিতীয় হওয়ার সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। লিখতে খারাপ লাগছে। তবু লিখতেই হচ্ছে, বাকি সব আসনেই অনেক পিছিয়ে থেকে তৃতীয় হবে। কোথাও জিতবে তৃণমূল, কোথাও বিজেপি। একদল যখন সাত লাখ ভোট পাবে, অন্য দল পাবে ছ লাখের মতো। সেখানে বামেদের ভোট এক লাখ থেকে দেড় লাখ। হ্যাঁ, যাদবপুর, দমদম বা শ্রীরামপুরের ক্ষেত্রেও অঙ্কটা হয়তো দেড় লাখের আশেপাশেই থাকবে।

তাই বলে কি সৃজন বা দীপ্সিতা খুব খারাপ প্রার্থী?‌ একেবারেই না। বরং, উল্টোটা। ওই কেন্দ্রের তৃণমূল বা বিজেপি প্রার্থীদের থেকে হাজারগুন এগিয়ে। এই ছেলে–‌মেয়েদের দেখলে ভরসা হয়। এঁদের কথা মুগ্ধ হয়ে শুনতে ইচ্ছে করে। মনে হয়, এই ছেলেগুলোরই তো সংসদে যাওয়া উচিত। সংসদ তো এঁদেরই জায়গা। কিন্তু তারপরেও বলতেই হচ্ছে, ভোটের অঙ্ক বড়ই নির্মম। একেবারে প্রান্তিক মানুষের কাছে এঁদের কথার আবেদন পৌঁছবে না। ফেসবুকে আমরা যে ছবিটা দেখি, সেটা আমাদের আনন্দ দেয়, আপ্লুত করে, এই আকালেও স্বপ্ন দেখার সাহস দেয়। কিন্তু ওই টুকুই। সেই স্বপ্ন বাস্তবের মাটিতে এসে হোঁচট খায়।

তাই আশাবাদী হতে মন চায়। কিন্তু বাস্তবের ছবিটা সেই ভরসা দেয় না।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.