ধীমান সাহা
চাল নেই, ডাল নেই, পয়সার দাম নেই
তবুও টিভি স্ক্রিনে খেলার বিরাম নেই।
সেই কোনকাল আগে শোনা গানের লাইন। তিন দশক পেরিয়ে গেল। নচিকেতার এই লাইনগুলো বারবার মনে পড়ে যাচ্ছে। সত্যিই, খেলার আর বিরাম নেই। আরও স্পষ্টভাষায় বলতে গেলে, ক্রিকেটের আর বিরাম নেই।
বিশ্বকাপের কদিন আগেও বিদেশ সফর করেছে ভারতীয় দল। আবার বিশ্বকাপ ফুরোতে না ফুরোতেই চারদিনের মাথায় শুরু হয়ে গেল অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি ২০ সিরিজ। একেবারে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ। এই সিরিজ চলতে চলতেই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের দামামা বেজে গেল। সেখানে টি২০, ওয়ান ডে, টেস্ট— তিন ফর্মাটেই খেলবে ভারত। সেখান থেকে ফিরতে না ফিরতেই ফের নতুন সিরিজ শুরু। তা হতে হতেই দু’মাস ধরে আইপিএল ধামাকা। সেই রেশ কাটার আগেই টি২০ বিশ্বকাপ।
একঘেঁয়েমি লাগে না? মাত্রাতিরিক্ত অমৃতও একসময় বিষ হয়ে দাঁড়ায়। ভারতীয় বোর্ড ক্রিকেটকে সেই পর্যায়েই নিয়ে যাচ্ছে। কে কোন সিরিজে দলে আছেন, সে কোন সিরিজে খেলছেন না, ক্রিকেটাররা নিজেরাই হয়ত গুলিয়ে ফেলেছেন। ক্রিকেটপ্রেমীরাও যেন বিরক্ত হয়ে পড়ছেন।
খেলোয়াড়দের না হয় তবু বিশ্রাম হচ্ছে। কিন্তু যাঁরা খেলা ভালবাসেন, যাঁরা খেলা দেখেন, তাঁদেরও তো বিশ্রাম জরুরি। বোর্ডকর্তারা বলতেই পারেন, দেখতে তো কেউ জোর করছে না। না দেখলেই পারেন। এটা সেই বেরসিক দোকানদারের সংলাপের মতো, ‘মিষ্টি ভাল নয়, তো আপনার নেওয়ার দরকার নেই। কে নিতে বলেছে?’ তবু দোকানদার আত্মসমীক্ষা করবেন না। তবু মনে মনেও ভাববেন না, মিষ্টিটা খারাপ হল কেন? বা ক্রেতার ভাল লাগছে না কেন?
আসলে, যাঁরা কখনও ক্রিকেট খেলেননি, এমনকী ভাল করে দেখেনওনি, তাঁদের হাতে বোর্ডের ক্ষমতা থাকলে বোধ হয় এমনটাই হয়। তাঁরা না বোঝেন ক্রিকেটারদের। না বোঝেন ক্রিকেটপ্রেমীদের। ক্রিকেটের কত বড় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে, এই অর্বাচীনদের সেটা বোঝার ক্ষমতাও নেই।