তেরো পার্বণের ইতিকথা

সৌরদীপ বর্মণ

বলতে পারেন কলকাতা দূরদর্শনের প্রথম বাংলা সিরিয়াল কী ? কুইজের চমৎকার একটি প্রশ্ন হতে পারে। যাঁরা সারাক্ষণ সিরিয়ালে ডুবে থাকেন, ইচ্ছেনদী থেকে পটলকুমার গোগ্রাসে গিলতে থাকেন, তাঁদের অনেকেই হয়ত তেরো পার্বনের নাম শোনেননি। কীভাবে তৈরি হল সেই সিরিয়াল? কারা ছিলেন ?

সময়টা ১৯৮৬। তখনই জন্ম নিল প্রথম বাংলা সিরিয়াল তেরো পার্বণ। হঠাৎ এমন নাম কেন? আসলে, তার আগে পর্যন্ত দূরদর্শনের সবকিছুই হত সরকারি অনুষ্ঠান। ১৯৮৪ নাগাদ কিছুটা বদল এল। বলা হল, বেসরকারি সংস্থাও অনুষ্ঠান করতে পারে। তবে তা তেরো পর্বের।
সেখান থেকেই তেরো পার্বণ নামকরণ। প্রথমে ঠিক ছিল, অনুষ্ঠানটি তেরো পর্বেরই হবে। তৈরি হল সোনেক্স প্রাইভেট লিমিটেড। তারাই তৈরি করবে এই সিরিয়াল। কাহিনি লেখার দায়িত্ব দেওয়া হল সমরেশ মজুমদারকে।সমরেশ তখন বেশ জনপ্রিয়। সদ্য পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার।
মূল পরিচালক জোছন দস্তিদার। সঙ্গে সহায়তা করেছিলেন বিভাস চক্রবর্তী, রমাপ্রসাদ বণিক। গল্পের কেন্দ্রে গোরা। মানে, সব্যসাচী চক্রবর্তী। দীর্ঘ বারো বছর আমেরিকায় কাটিয়ে দেশে ফিরে আসছে গোরা। ফিরে এসে দেখে, তার চারপাশের চেনা শহরটা কেমন যেন বদলে গেছে। যে কলকাতাকে সে দেখে গিয়েছিল, আর এখন যে কলকাতাকে সে দেখছে, তার মধ্যে অনেক ফারাক।

tero parbon2

এছাড়াও ছিলেন চন্দ্রা দস্তিদার, ইন্দ্রজিৎ দেব। আরও একজনের কথা বলতেই হবে। এই সিরিয়ালের হাত ধরেই তাঁর টিভির দুনিয়ায় আসা- ইন্দ্রাণী হালদার। সিরিয়ালটি হত বৃহস্পতিবার, রাত আটটায়। শুরু থেকেই দারুণ জনপ্রিয় হতে থাকে। তেরো পর্বেই শেষ হওয়ার কথা।কিন্তু এই জনপ্রিয়তা দেখে আরও তেরো পর্বের অনুমতি দেওয়া হয়। ততদিনে নতুন স্পন্সর জুটে গেছে। তারা চাইল, আরও টেনে নিয়ে যেতে। আরও তেরো পর্বের অনুমোদন পাওয়া গেল দিল্লি থেকে।

কথা ছিল তেরো পর্বে শেষ হবে। কিন্তু শেষমেষ তা ৩৯ পর্ব পর্যন্ত চলেছিল। আরও চালিয়ে যাওয়ার দাবি উঠেছিল। হয়ত অনুমোদনও পাওয়া যেত। কিন্তু অহেতুক কাহিনিকে বাড়াতে চাননি পরিচালক।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.