কুশ আচার্য
সেদিন বাংলাদেশের এক চ্যানেলে একটি সাক্ষাৎকার দেখার সুযোগ হল। ঠিক সাক্ষাৎকার না বলে লেখক–পাঠক আড্ডা বলাই ভাল। সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার গিয়েছিলেন বাংলাদেশে। সেখানে লেখক–পাঠক মুখোমুখি আড্ডার ব্যবস্থা হয়েছিল। সেই আড্ডাই সম্প্রচার হয়েছিল একটি প্রথমসারির চ্যানেলে।
শুনে অবাক হলাম, এই সমরেশ মজুমদার মাঝে দীর্ঘদিন স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলন! পুরনো ঘটনা মনে করতে পারছিলেন না। চেনা মানুষদের চিনতে পারছিলেন না। এমনকী বাংলা অক্ষরও চিনতে পারছিলেন না! বাংলা লেখাও পড়তে পারছিলেন না। খুব বেশিদিনের পুরনো ঘটনা নয়। বছর তিন–চার আগের ঘটনা। পরে আস্তে আস্তে স্বাভাবিক স্মৃতি ফিরে পান। আস্তে আস্তে আবার লেখার জগতে ফিরে আসেন।
একদিন–দুদিন নয়। প্রায় দু’বছর এরকম একটা অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে এপার বাংলার এই জনপ্রিয় লেখককে। আমরা কোনও খোঁজও রাখিনি! এত এত লোক লেখকের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করেন। পাশে দাঁড়িয়ে সেলফি তোলেন। তাঁদের কজন জানতেন? কজন খোঁজ রেখেছিলেন? শোভন–রত্নার ঝগড়া হলে একের পর এক সন্ধে কেটে যায় টিভি চ্যানেলের তরজায়। অথচ এপার বাংলার বরেণ্য সাহিত্যিক স্মৃতিভ্রংশ অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে এই বয়সেও আবার দারুণভাবে লেখায় ফিরে এলেন, এটা নিয়ে একটা অনুষ্ঠান হতে পারত না!