‌‘‌কাকু’‌র সাদা মনে কাদা নেই

সরল বিশ্বাস

কয়েকদিন ধরেই বাতাসে ভাসছিল দুটো শব্দ— কালীঘাটের কাকু। কালীঘাটের ভাইপো কে, এটা একটা বাচ্চা ছেলেও জানে। কিন্তু এই কাকু আবার কোথা থেকে উদয় হলেন!‌ এই কাকু আসলে কে?‌ কোনও কাল্পনিক চরিত্র?‌ কোনও সাঙ্কেতিক নাম?‌ নাকি সত্যি কেউ আছেন, যিনি ‘‌কাকু’‌ নামে পরিচিত।

অবশেষে সেই নাম সামনে এল। জানা গেল, তাঁর নাম সুজয় ভদ্র। যথার্থই ভদ্র। তাঁর নাম নিয়ে তোলপাড় চলছে, অথচ তিনি কী শান্ত, কী নির্বিকার। চাইলেই পালাতে পারতেন, লুকিয়ে পড়তে পারতেন। অন্তত মিডিয়ার ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যেতে পারতেন।

কিন্তু তিনি পালালেন না। একের পর এক মিডিয়াকে অনন্ত সময় ধরে ‘‌বাইট’‌ দিয়ে গেলেন। মূলস্রোত মিডিয়া তো ছিলই, এমনকী অখ্যাত ইউটিউব চ্যানেলও তাঁর ‘‌এক্সক্লুসিভ ইন্টারভিউ’‌ থেকে বঞ্চিত হয়নি। নানা অপ্রিয় প্রশ্ন। একবারও তিনি রাগলেন না। মেজাজ হারালেন না। কী শান্তভাবে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গেলেন।

নিন্দুকেরা বলতেই পারেন, শেখানো সংলাপ। কিন্তু সব প্রশ্ন তো আর ‘‌কমন’‌ আসে না। অচেনা প্রশ্নেও কত সাবলীল। কই, এতরকম সুইং, গুগলিতেও তাঁর ডিফেন্স ভেদ করা গেল না। খেললেন সেই ব্যাটের মাঝখান দিয়ে। এমন প্রতিভা এতদিন কোথায় লুকিয়ে ছিল!‌

এর মাঝেও একটা সারসত্যি বলেই ফেললেন। ‘‌আমার বসকে কেউ ছুঁতে পারবে না।’‌ আপাতভাবে নিরীহ একটা সংলাপ। কিন্তু বিটুইন দ্য লাইন্স পড়তে জানলে কত ব্যাখ্যাই বেরিয়ে আসে। কেন তাঁর বসকে ছোঁয়া যাবে না, তা অবশ্য ভেঙে বলেননি। অনেক রকম ব্যাখ্যা হতে পারে। ১)‌ তাঁর বস নিতান্তই একজন সোজাসাপ্টা মানুষ, এসব দুর্নীতির কিছুই তিনি জানেন না। ২)‌ তাঁর বস এতটাই ধুরন্ধর, কোনও প্রমাণ রাখেন না। ৩)‌ তাঁর বসের উপর তলার বোঝাপড়া এতটাই মসৃণ, এই এজেন্সি আসলে কিছুই করতে পারবে না। এই এজেন্সি যতই দৌড়ঝাপ করুক, তাদের হাত পা বাঁধা।

যে যেমন খুশি ভেবে নিতে পারেন। কাকু কিন্তু সহজ সরল মানুষ। তাঁর সাদা মনে কোনও কাদা নেই। ‌

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.