এই মশাল জ্বলতেই থাকুক

কথায় আছে, বাঙালির বারো মাসে তের পার্বণ। চারিদিকে যে হারে মেলার হিড়িক, এখন আর সংখ্যাটাকে তেরতে বেঁধে রাখা যাবে না। শীরদোৎসব বা দীপাপলির কথা ছেড়ে দিন। আবহমান কাল থেকে চলে আসছে। কিন্তু তার বাইরে সামাজিক উৎসব!‌ নিশ্চিতভাবে বাকি সব উৎসবকে দশ গোল দেবে বইমেলা। আন্তর্জাতিক আসরে বাঙালি যে কয়েকটি ব্যাপারে গর্ব করতে পারে, বইমেলা নিশ্চিতভাবে সামনের সারিতে থাকবে। বারোদিন ধরে এত মানুষের সমাগম, এত বইয়ের ক্রয়–‌বিক্রয় বিশ্বের কটা শহরে হয়?‌

দীর্ঘদিন বইমেলা হয়ে এসেছে ময়দান চত্বরে। অনেকের কাছে বইমেলা আর ময়দান যেন সমার্থক হয়ে আছে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক ঠিকানাই বদলে যায়। করুণাময়ী চত্বরে বইমেলা পেয়েছে তার স্থায়ী ঠিকানা। জায়গাটা হয়ত একটু ছোট। কিন্তু যোগাযোগের দিক থেকে যতটা দুর্গম ছিল, এখন আর ততখানি দুর্গম বলা যাবে না। নানা দিকের বাস, অটো যেমন আছে, তেমনই নতুন সংযোজন মেট্রো। শিয়ালদার সঙ্গে জুড়ে গেছে। হাওড়ার সঙ্গে জুড়ে গেলে আসা–‌যাওয়া আরও মসৃণ হতে পারে। তখন কলকাতা বইমেলা আর নিছক কলকাতার থাকবে না। শহরতলিও আবার সামিল হবে।

এখন অনলাইন ডেলিভারিতে ঘরে বসেই বই পাওয়া যায়। কলেজ স্ট্রিটে গেলে ডাবল ডিসকাউন্টও পাওয়া যায়। যত সহজ বিকল্পই আসুক, তবু বইমেলা ইজ বইমেলা। এর সঙ্গে আর কোনও মেলার তুলনা চলে না।

এত মানুষের ভিড়। সবাই কি বই কেনেন?‌ বইয়ের দোকানে যেমন ভিড়, ফুডস্টলের ভিড়ও বেশি বই কম নয়। কেউ কেউ কটাক্ষ করে বলেন, এটা মূলত খাদ্যমেলা, যেখানে বইও পাওয়া যায়। কথাটা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। শহরের নানা প্রান্তে নানা নামে খাদ্য মেলার তো অভাব নেই। সেখানে তো শুধুই খাবার। বইয়ের উৎপাত নেই। তাহলে সেখানে এমন ভিড় হয় না কেন?‌ তাহলে, কোথাও একটা বইয়ের মাহাত্ম্য আছে বইকি। সেটা বোঝা যায়, যখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামে। বা বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। একেকটা স্টলের বাইরে এঁকে বেঁকে দীর্ঘ লাইন। শুধু একটু বই নেড়েচেড়ে দেখার আশায়। শুধু একটা, দুটো পছন্দের বই কেনার আশায়। আবার ছোটখাটো স্টলেও তো ভিড় কম নয়। লিটল ম্যাগের স্টলগুলোতেই বা এত ভিড় কেন?‌ এই ছবিগুলোই তো এই আকালেও স্বপ্ন দেখায়।

***
এটা বইমেলা সংখ্যার সম্পাদকীয়। চাইলে অনায়াসেই বেঙ্গল টাইমসের বইমেলা সংখ্যা পড়তে পারেন। পিডিএফ আপলোড করা আছে। সঙ্গে ওয়েবলিঙ্কও দেওয়া আছে। ক্লিক করলেই খুলে যাবে। প্রচ্ছদের ছবিতেও ক্লিক করতে পারেন। তাহলেও নতুন ই–‌ম্যাগাজিন অনায়াসে পড়তে পারবেন। পড়ুন, মতামত দিন।

 

https://bengaltimes.in/wp-content/uploads/2023/02/boi-mela-special.pdf

 

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.