রজত সেনগুপ্ত
একেবারে সঠিক জায়গাতেই আলো ফেলেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলি। আর কতদিন তদন্ত চলবে? আসল পান্ডারা কি ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবেন?
গত কয়েক বছর ধরে সিবিআই নামক বস্তুটি নিজেদের হাস্যকর করে তুলেছে। তাদের শীতঘুম সত্যিই বিখ্যাত। তারা হঠাৎ করে জেগে ওঠেন। মনে হয়, এই বুঝি কিনারা হয়ে গেল। তারপরই আবার ঘুমিয়ে পড়েন। যাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত আছে, তাঁরা নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন। তাঁরা জানেন, লোকদেখানো জেরা হবে। বড়জোর একবার অ্যারেস্ট। লোকদেখানো চার্জশিট। এর বেশি আর কিছুই হবে না।
আস্তে আস্তে সাধারণ মানুষের স্মৃতি থেকে বিষয়গুলো হারিয়েও যায়। অভিযুক্তরা পরে গলা ফুলিয়ে বলে বেড়ান, সিবিআই তদন্ত তো হল। কিছু বের করতে পারল?
প্রাইমারি এবং এসএসসি কাণ্ডেও প্রায় তাই। নেহাত আদালতের নজরদারিতে তদন্ত হচ্ছে। তাই চক্ষুলজ্জার কারণে কিছু পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে। কিন্তু তদন্তের গতি আবার মাঝপথেই শিথিল হয়ে গেছে। যাঁদের ধরা হয়েছে, তাঁরা যে আসল আসামী নন, এই সহজ সত্যিটুকু বুঝতে এত সময় লাগছে? যে সব কর্তারা ধরা পড়েছেন, তাঁদের সম্মিলিত অপরাধ হয়ত কুড়ি শতাংশ। আসল আশি শতাংশ তবে কে বা কারা? উত্তরটা প্রায় সবাই জানেন। শুধু সিবিআই জানে না। যেটা তিনদিনে জানা যেত, সেটা তিন মাসেও জানতে পারছেন না।
অনুব্রত কোথায় লটারি কেটেছিলেন। সেই টিকিট আসলে তাঁর কিনা। এসব বিষয় নিয়ে অবান্তর চর্চা চলছে। প্রশ্নটা এখন আর অনুব্রত কোথা থেকে টাকা পেতেন, সেটা নয়। সেটা এতদিনে মোটামুটি অনেকটাই জানা হয়ে গেছে। এখন প্রশ্ন হল, অনুব্রত কোথায় পাঠাতেন। গত দু’মাসে সেই প্রশ্নের কিনারা করতে এত টালবাহানা কেন?
একেবারেই সঠিক জায়গায় আলো ফেলেছেন বিচারপতি। সহজ প্রশ্নের উত্তর না খুঁজে নিজেরাই ভুলভাল প্রশ্ন তৈরি করে তার উত্তর হাঁতড়ে বেড়াচ্ছেন।