বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন
সে খেলার কীই বা বোঝে, যে শুধু খেলা বোঝে! সেই কতকাল আগের একটা কথা। বারবার সেটাই যেন সত্যি হতে দেখি। এমনটাই যেন ফের দেখালেন বিরাট কোহলি।
পাকিস্তানের এত ১৫৯ জবাবে ভারত ১৬৩ রান তুলল। ৪ উইকেটে জয়ী হল। শুকনো এই পরিসংখ্যানে কীই বা আছে? কিছুই নেই। বা থাকলেও নেহাতই সামান্য।
মাত্র ৩১ রানে ৪ উইকেট পড়ে গেছে। সেখান থেকে একটা জুটিই যেন ছবিটা পাল্টে দিল। একটা সময় ৮ বলে ২৮। তখনও কি ভাবা গিয়েছিল, ভারত এই ম্যাচ জিততে পারে? পরপর দুটো বলে দুটো ছক্কা। নিঃসন্দেহে এই ছক্কা দুটোই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। ওই দুটো ছক্কাই যেন বুঝিয়ে দিল, একজন জাত ব্যাটসম্যান কাকে বলে।
গত এক বছরের বেশি সময় ধরে কত ঝড়ঝাপটাই না গেছে বিরাট কোহলির ওপর দিয়ে। দীর্ঘদিন ব্যাটে কোনও শতরান আসেনি। আড়াই বছরের ওপর কোনও ঘরানার ক্রিকেটেই এই শতরান আসেনি। যাঁর নামের পাশে সত্তরখানা শতরান, তিনি কিনা আড়াই বছর ধরে শতরানহীন! কতদিন শতরান পাননি, এই ফিরিস্তিটাই শুনতে হচ্ছিল। অবশেষে সেই শতরান পেয়েছিলেন এশিয়া কাপে। কিন্তু হংকংয়ের বিরুদ্ধে শতরানে সেই গুরুত্ব না থাকারই কথা। তার ওপর ভারত আগেই এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে গেছে। এই ম্যাচের পর কোনও কিছুই নির্ভর করছিল না। তাই সেই শতরানে পরিসংখ্যানের ক্ষরা হয়ত কেটেছিল, কিন্তু সম্ভ্রম তৈরি হয়নি।
শাপমোচনের আসল মঞ্চ হয়ে থাকল মেলবোর্নের এই ম্যাচ। কী প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে মাথা ঠান্ডা রেখে এইভাবে জয়ের মঞ্চ তৈরি করা মোটেই সহজ কাজ ছিল না। এই ইনিংস আসলে কী শিখিয়ে গেল? ১) নিজের ওপর ভরসা রাখো। ২) কঠিন পরিস্থিতিতেও হাল ছেড়ো না। ৩) শুরুতেই বড় লক্ষ্যের কথা ভাবতে হবে না। ছোট ছোট লক্ষ্য স্থির করো। ৪) লড়াইয়ে টিকে থাকলে পরে কাজটা সহজ হয়। ৫) একটা সময় পরিস্থিতি নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়। ৬) আসল সময়ে আসল কাজটা করতে হয়। ৭) অতীত ভাবার দরকার নেই। শুধু ফোকাস ঠিক রাখো।
এগুলো কি শুধু ম্যাচের বিশ্লেষণ? এগুলো জীবনের শিক্ষা নয়? সত্যিই, একটা ইনিংস কতকিছু শিখিয়ে দিয়ে গেল!