এমনটাই তো হওয়ার ছিল

বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেন

অনেকেই অবাক হচ্ছেন, সৌরভ গাঙ্গুলির মতো বরেণ্য ক্রিকেটারকে কিনা বিসিসিআই থেকে সরে দাঁড়াতে হল!‌ কিন্তু এটাই তো হওয়ার ছিল। যাঁরা একটু বিচক্ষণ, তাঁরা দেওয়াল লিখনটা অনেক আগেই পড়তে পেরেছিলেন।

বলা হচ্ছে, এর পেছনে রাজনীতি রয়েছে। একেবারেই সত্যি কথা। রাজনৈতিক প্রভুদের অজান্তে এমনটা হয়নি। কিন্তু সৌরভের নিয়োগের পেছনেও কি রাজনীতি ছিল না। মনে করুন বছর তিনের আগের কথা। সেবার ভোটাভুটি হলে সৌরভ কি সভাপতি হতে পারতেন?‌ যতই সফল ক্যাপ্টেন হোন, দেশকে যত গৌরবই এনে দিন, ভোট হলে তাঁকে নিষ্ফল, হতাশের দলেই থাকতে হত।

একরাতেই হিসেব বদলে গেল। যাঁর নির্দেশে ছবিটা আমূল পাল্টে গেল, বলার অপেক্ষা রাখে না, তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাতারাতি তাঁর ছেলে বোর্ডের সচিব হয়ে গেলেন। আর সৌরভ হলেন সভাপতি। সুতরাং, সৌরভের নিয়োগের পেছনেও অতিমাত্রায় রাজনীতি ছিল।

এবার সৌরভকে রাখা হবে না, মোটামুটি পরিষ্কার ছিল। কুলিং অফের জন্য আরও তিন বছর পাওয়া গেল। শ্রীমান জয় শাহই হয়ত সভাপতি হতেন। কিন্তু সামনে গুজরাটের নির্বাচন। এই সময় পরিবারতন্ত্র নিয়ে জেরবার হতে চায়নি বিজেপি। সেই কারণেই আপাতত তাঁকে সরে দাঁড়াতে হচ্ছে। আপাতত সামনে রাখা হল রজার বিনিকে। এক ঢিলে অনেকগুলো পাখিই মরল। ১)‌ বলা যাবে, ইনিও একজন প্রাক্তন ক্রিকেটার। যেমন তেমন ক্রিকেটার নন, একেবারে বিশ্বজয়ী দলের ক্রিকেটার। ২)‌ সামনে বিনি থাকলেও আড়াল থেকে জয় শাহর ছড়ি ঘোরাতে কোনও সমস্যা হবে না। ৩)‌ সৌরভকেও বুঝিয়ে দেওয়া গেল, জলে নামব, চুল ভেজাব না, এমনটা চলবে না। আসতে হলে সরাসরি এসো। দুপক্ষকে ঝুলিয়ে রাখা চলবে না।

আইসিসি–‌র চেয়ারম্যান করে একটা পুনর্বাসন দেওয়াই যেত। কিন্তু আপাতত সেই পুনর্বাসনটাও দেওয়া হল না। বলা যায়, সামনে গাজর ঝুলিয়ে রাখা হল। এল আইপিএল চেয়ারম্যান হওয়ার প্রস্তাব। এতদিন বোর্ড সভাপতি থাকার পর বোর্ডের অধিনস্থ কমিটিতে কেনই বা থাকতে যাবেন?‌ একদিক দিয়ে সৌরভ ভালই করেছেন এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে।

ঘরের মাঠ থেকে আবার শুরু হবে নতুন ইনিংস। ঘুরে দাঁড়ানোর নতুন লড়াই। তিনি কামব্যাক ম্যান। আজ না হোক কাল, আবার সেই চেয়ারে তিনি ঠিক বসবেন।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.