স্বরূপ গোস্বামী
অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, বোর্ড সভাপতি হিসেবে সৌরভ গাঙ্গুলির মেয়াদ বাড়ল। ২০২৫ পর্যন্ত তিনি বোর্ড সভাপতি থাকছেন।
প্রথম দিন বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে, পরের দিন বিভিন্ন কাগজে সেই মর্মেই প্রতিবেদন।
আপাতভাবে সেটাই মনে হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের এই রায় সৌরভের কাছে যতটা স্বস্তির, তার থেকে বেশি বোধ হয় অস্বস্তির। এই রায় বোর্ড থেকে সৌরভের বিদায়ের রাস্তাই প্রশস্ত করল।
কীভাবে? কোর্টের রায় অনুযায়ী, সৌরভ বা জয় শাহকে এখনই কুলিং অফে যেতে হচ্ছে না। তাঁরা আরও তিন বছর সময় পাছেন।
সৌরভের জন্য যেমন সময়টা তিন বছর, জয় শাহর জন্যও সময়টা তিন বছর। অর্থাৎ, আরও তিন বছর যদি সৌরভ সভাপতি থেকে যান, তার মানে আরও তিন বছর জয় শাহকে সচিব হয়েই থেকে যেতে হবে। তারপর দু’জনকে একসঙ্গে কুলিং অফে যেতে হবে।
তার মানেটা কী দাঁড়াল? অমিত শাহর পুত্রের এ যাত্রায় আর বোর্ড সভাপতি হওয়া হচ্ছে না। তিন বছর পর তাঁকে নির্বাসনে যেতে হবে। ফিরে আসার সুযোগ পাবেন আরও তিন বছর পর। অর্থাৎ, ৬ বছর। প্রবল উচ্চাকাঙ্খী জয় শা পারবেন ৬ বছর অপেক্ষা করতে? তাছাড়া, ৬ বছর পর বোর্ডের সমীকরণ তাঁর অনুকূলে থাকবে, তার কী গ্যারান্টি আছে? রাজ্যে রাজ্যে সমীকরণ বদলে যাবে। কেন্দ্রে, বোর্ডেও নানা সমীকরণ বদলাবে। কেন্দ্রে অমিত শাহর প্রভাব না থাকলে বোর্ডে জয় শাহরও কোনও প্রভাব থাকবে না।
তাই জয় শাহকে সভাপতি হতে গেলে এখনই হতে হবে। তাঁর ৬ বছর তর সইবে না।
তাহলে উপায়? সৌরভ গাঙ্গুলির কী হবে? তাঁর জন্য একটা সম্মানজনক পুনর্বাসন প্যাকেজ থাকছে। তুমি বাপু সম্মান থাকতে থাকতে আইসিসি–তে চলে যাও। ওটাই তোমার জায়গা।
এতে জয় শাহর সভাপতি হওয়ার রাস্তাও পরিষ্কার হল। আবার সৌরভের সম্মানজনক পুনর্বাসনও হল।
এই পুনর্বাসন প্যাকেজ মেনে নেওয়া ছাড়া এই মুহূর্তে সৌরভের সামনে আর কোনও বিকল্প রাস্তাও নেই। কারণ, বিজেপির সমর্থন ছাড়া বোর্ডে তাঁর পক্ষেও টিকে থাকা মুশকিল, এই সহজ সত্যিটুকু তাঁর থেকে ভাল আর কে বোঝেন!
তাই, সুপ্রিম কোর্ট যতই রক্ষাকবচ দিক, বোর্ড থেকে সৌরভের বিদায় অনিবার্য।