রক্তিম মিত্র
বারবার ইডি জেরা থেকে বেরিয়েই তিনি জাতির উদ্দেশে কিছু না কিছু ভাষণ দিয়ে থাকেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না।
এবার তীর ছুঁড়লেন শুভেন্দু অধিকারীর দিকে। অভিযোগ, ফেরার বিনয় মিশ্রর সঙ্গে নাকি ফোনে কথা হয়েছে শুভেন্দুর। তিনি নাকি বিনয়কে আশ্বস্ত করেছেন, ‘তোমার কেসটা আমি দেখে নেব।’ এই সংক্রান্ত অডিও ক্লিপিংস নাকি তাঁর কাছে আছে। তিনি বিচারকের কাছে জমা দিতে পারেন।
ভাইপোর দাবির সত্যি–মিথ্যে জানা নেই। তবে কোনও একবার শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর কথা হয়ে থাকতেই পারে। প্রশ্ন হল, এই অডিও ক্লিপ তিনি তদন্তকারীদের হাতে তুলে দিলেন না কেন? যেখানে তুলে দেওয়ার, সেখানে না দিয়ে বাইরে এসে বাজার গরম করার কী মানে হয়?
শুভেন্দুর দাবি, তাঁর ফোন থেকে কোনও কথা হয়নি। হয়ত তাড়াহুড়ো করেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তাই এত গোছাল বয়ান ছিল না। কিন্তু এই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া থেকে এটুকু বোঝা যায়, অন্য কারও ফোন থেকে কথা হয়েও থাকতে পারে।
যদি শুভেন্দুর সঙ্গে একবার কথা হয়েও থাকে, তার মানে কি এটা প্রমাণ হয়, ভাইপোর সঙ্গে সেই পলাতকের কোনও সম্পর্ক ছিল না? সেই বিনয় মিশ্র তো তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সেটা তো আর শুভেন্দু করেননি।
সবথেকে বড় প্রশ্ন, এই অডিও ক্লিপ ভাইপোর কাছে এল কীভাবে? তিনটি কারণ থাকতে পারে। ১) বিনয় মিশ্র দিয়েছেন। ২) শুভেন্দু দিয়েছেন। ৩) ফোন ট্যাপ করে পাওয়া গেছে।
প্রথমটা হলেও হতে পারে। কিন্তু দ্বিতীয়টার কোনও সম্ভাবনা নেই। অর্থাৎ, শুভেন্দু যদি কথাও বলেও থাকেন, তিনি নিশ্চয় অডিও ক্লিপ ফাঁস করবেন না। তাহলে থেকে যায় তৃতীয় সম্ভাবনা। অর্থাৎ ট্যাপিং। রাজ্য সরকার পুলিশকে যেভাবে ব্যবহার করে, তাতে এই ট্যাপিং বস্তুতি অসম্ভব তো নয়ই, বরং সেটাই বেশি করে বিশ্বাসযোগ্য।
আরও একটা প্রশ্ন। প্রতিবার ইডি থেকে বেরিয়েই তিনি এত লম্বা ভাষণ দেওয়ার সাহস পান কীভাবে? যেভাবে বিমানবন্দর কাণ্ডের তিন–চারদিন পর প্রেস মিট করে জানালেন, একটা ভিডিও ফুটেজ দেখানো হোক। কীভাবে এত বড় চ্যালেঞ্জটা ছুঁড়তে পারলেন? পারলেন, কারণ আরও কোনও উঁচু মহল থেকে আশ্বাস পেয়েছিলেন, ফুটেজ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রেও তিনি জানেন, আর যার যাই হোক না কেন, তাকে নিয়ে কোনও গোপন তথ্য বেরিয়ে পড়বে না। একেবারে সর্বোচ্চ জায়গা থেকে এমন আশ্বাস না পেলে এমন আত্মবিশ্বাস আসে না।