শতাব্দীর সময়টা উল্টে দেওয়া যায় না!‌

সৌম্যজিৎ চৌধুরি

উত্তরবঙ্গে যাওয়ার টিকিট পাওয়াই দুষ্কর। পনেরো দিন আগেও যেন লম্বা ওয়েটিং লিস্ট। এমনকি পর্যটন মরশুমে একমাস আগেও টিকিট পাওয়ার নিশ্চয়তাও নেই। ফেরার ক্ষেত্রেও সেই একই সমস্যা। কনফার্ম টিকিট হাতে নিয়ে বেড়াতে যাবেন, তার উপায় নেই। তাহলে, আপনাকে দু’‌মাস আগে টিকিট বুকিং করতে হবে।

কিছুটা সুরাহা হয়েছিল শতাব্দী এক্সপ্রেসে। এই ট্রেনের ভাড়া বেশি। সেই কারণে হয়ত ভিড় কিছুটা কম। এই ট্রেনের টিকিট মোটামুটি পাওয়া যায়। অন্তত বেশি ভাড়া দিয়েও যাওয়ার বা ফেরার নিশ্চয়তা রয়েছে। ট্রেনটির গতি ও পরিষেবাও বেশ ভাল।

কিন্তু এই ট্রেনের সময়টা নিয়ে কিছু বলার আছে। এনজেপি থেকে এই ট্রেন ছাড়ে মোটামুটি ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ। হাওড়ায় ঢুকছে দুপুর দুটো নাগাদ। আবার হাওড়ায় ছাড়ে দুপুর সোয়া দুটো নাগাদ। এনজেপিতে পৌঁছয় রাত সাড়ে দশটায়।

রেলকর্তারা কী ভেবে এমন টাইম টেবিল ঠিক করেছিলেন, জানি না। আমার মনে হয়, এই টাইমটেবিলটা একটু উল্টে দিলে পর্যটকদের সুবিধা হয়। যাওয়ার সময় হাওড়া থেকে যদি ভোরে ছাড়ে, তাহলে দুপুর নাগাদ শিলিগুড়ি পৌঁছে যাচ্ছে। কেউ যাবেন পাহাড়ে, কেউ ডুয়ার্সে, কেউ বা সিকিমে। তাঁরা দুপুরে নেমে এনজেপি থেকে রওনা হয়ে যেতে পারবেন। বিকেল বা সন্ধের আগেই সেই গন্তব্যে পৌঁছেও যেতে পারবেন। কিন্তু হাওড়ায় দুপুরে ছাড়ায় শিলিগুড়িতে ঢুকছে রাত সাড়ে দশটায়। কখনও কখনও তা সাড়ে এগারোটা এমনকি বারোটাও বেজে যায়। এত রাতে শিলিগুড়িতে নেমে তাঁরা যাবেন কোথায়?‌ বাধ্য হয়েই শিলিগুড়ির কোনও হোটেলে মাঝরাতে আশ্রয় নিতে হচ্ছে।

ফেরার সময়ও তাই। শিলিগুড়িতে ভোর সাড়ে পাঁচটায়। এত ভোরে পাহাড় থেকে নেমে আসা সম্ভব নয়। তার মানে, আগেরদিন বিকেল বা রাতে নেমে আসতে হচ্ছে। শিলিগুড়িতে একরাত থেকে পরেরদিন ভোরে ট্রেন ধরতে হচ্ছে। দু ক্ষেত্রেই শিলিগুড়িতে এক রাত করে কাটাতে কার্যত বাধ্য করা হচ্ছে। অথচ, ট্রেনের সময়সূচি যদি উল্টো করা হত, তাহলে অন্তত এই বিড়ম্বনায় পড়তে হত না। আশা করি, রেল কর্তারা বিষয়টা ভেবে দেখবেন।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.