বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন: ‘রবিবার সে কেন মাগো এমন দেরি করে/ধীরে ধীরে পৌঁছয় সে সকল বারের পরে।’ ছোটদের জন্য লেখা রবি ঠাকুরের কবিতা। সেই ছোট্ট শিশুর কাছে রবিবার কেন এত প্রিয়, কেন সে এত দেরিতে আসে, এই ছবিটাই ফুটে উঠেছিল কবিতায়।
কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটের ক্ষেত্রে রবিবারটা বোধ হয় উল্টো বার্তা বয়ে আনছে। অন্তত শেষ তিনটি রবিবার এল তিনটি বিপর্যয়। প্রথম রবিবার, অর্থাৎ ২৪ অক্টোবর। টি২০ বিশ্বকাপের অভিযান শুরু ভারতের। প্রথম ম্যাচেই সামনে পাকিস্তান। বিশ্বকাপের ইতিহাসে যে লড়াইটা একেবারেই একপেশে। কী ৫০ ওভার, কী ২০ ওভার–দুই ঘরানাতেই বিশ্বকাপে অনেকটা এগিয়ে ভারত। হয়ত তাই কিছুটা আত্মতুষ্টি এসে গিয়েছিল। হয়ত তাই, বাবর আজমকে কেউ ধর্তব্যের মধ্যেই আনছিলেন না। ফল কী হল? একেবারেই একপেশে। দশ উউকেটে জিতে নিল পাকিস্তান।
পরের রবিবার। সামনে নিউজিল্যান্ড। ধারে–ভারে ভারতের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে সমানে সমানে পাল্লা দেয়। বিশেষ করে গুরুত্বপর্ণ ম্যাচগুলোয় ভারত কেমন যেন গুটিয়ে যায়। এই নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে সেভাবে পাল্লা দিতে পারে না। এবার পাকিস্তান ম্যাচের পর ছিল সাতদিনের ব্যবধান। অনেকটা বিশ্রাম নিয়ে তরতাজা হয়ে নামার কথা। ফল কী হল? এবারও হার। তবে ব্যবধান একটু কমল। দশ উইকেটের বদলে এবার আট উইকেটে।
এই দুই হারের পরই দেওয়াল লিখন অনেকটা পরিষ্কার হয়ে যায়। বিরাট কোনও ওলট–পালট না হলে ভারতের বিদায়ের চিত্রনাট্য যেন লেখা হয়েই গেছে। ভারতের পরের দুই ম্যাচ ছিল আফগানিস্তান ও স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে। যথারীতি দুটো ম্যাচেই বেশ বড় ব্যবধানে জয় এল। ধরে নেওয়া যায়, শেষ ম্যাচে নামিবিয়ার বিরুদ্ধেও বড় জয় আসবে। কিন্তু সেই তিন জয় দিয়ে কী হবে? পাকিস্তানের সামনে পাঁচটা ম্যাচ জেতার সুযোগ। নিউজিল্যান্ডের সামনে রয়েছে চার ম্যাচে জেতার সুযোগ। স্বাভাবিকভাবেই এই দুই দলই যাবে শেষ চারে।
তবু আশায় বাঁচে চাষা। যদি আফগানিস্তানের কাছে নিউজিল্যান্ড হেরে যায়। তাহলে ভারত, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান — তিন দেশেরই তিনটি করে জয়। তখন কেসি নাগের অঙ্ক কষে নেট রানরেটে যাওয়ার একটা সুযোগ। তাই আরও একটা রবিবার যদি অঘটন ঘটে, এই অপেক্ষায় ছিল একশো তিরিশ কোটির দেশ। কদিন আগেও যে আফগানিস্তান দেখে দূর ছাই করেছি, সেই আফগানিস্তানের জয় চেয়ে হয়ত কেউ কেউ মন্দিরে পুজোও দিয়েছেন। সব পুজো, সব অঙ্ক বিফলে গেল। যথারীতি জিতে গেল নিউজিল্যান্ড। এও এক রবিবার।
পরপর তিন রবিবারে তিন রকম স্বপ্নভঙ্গ। রবিবারটা সত্যিই বডড পাজি। কেন যে আসে!