বৃষ্টি চৌধুরি
টিভি সিরিয়াল নিয়ে বেঙ্গল টাইমসে বেশ কয়েকটি লেখা পড়লাম। বিষয়গুলির সঙ্গে অনেকটাই একমত। এখন সিরিয়ালের নামে যা হচ্ছে, তা অত্যন্ত নিম্নরুচির। না আছে সাহিত্য, না আছে বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপ। সবাই ড্রয়িংরুমে সারাদিন গোল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েদের গা ভর্তি গয়না। ঘরের মধ্যে কেউ এমন পোশাকে থাকে ? এমন দামি শাড়ি পরে থাকে ? এই প্রশ্নগুলোই উঠে এসেছে বেঙ্গল টাইমসের বিভিন্ন লেখায়। একেবারেই সঙ্গত প্রশ্ন।
অথচ, সিরিয়াল মানে কিন্তু এমনটা ছিল না। বছর দশেক আগেও বেশ উপভোগ্য কিছু সিরিয়াল হত। এখন যাঁরা সিরিয়ালে সকাল থেকে সন্ধে ডুবে আছেন, তাঁদের প্রতি সত্যিই করুণা হয়। তাঁরা আসল সিরিয়ালের স্বাদ বোধ হয় পাননি।
বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের কাছে আমার আবেদন, এইসব নতুন সিরিয়াল না দেখিয়ে দু-একটা পুরানো সিরিয়ালকে রিপিট করা যায় না ? হিন্দিতে কিন্তু এই প্রবণতাটা আছে। আটের দশকের রামায়ন বা মহাভারতকে আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এমনকি হামলোগ, বুনিয়াদ বা মালগুডিউ ডেজ-এর মতো সিরিয়ালকে আবার দেখানো হচ্ছে। তাহলে আটের দশকের তের পার্বন বা সেই সময় ফিরতে বাধা কোথায় ?
আমাদের কিশোরীবেলার একের পর এক ভাল সিরিয়ালের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। রবি ঘোষের দুটি অসাধারণ সিরিয়াল ছিল – গোয়েন্দা ভগবান দাস, অভিনন্দন ভগীরথ। মনোজ মিত্র, সাবিত্রী চ্যাটার্জির ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’ এর কথা এখনও মনে পড়ে।
সাহিত্য নির্ভর আরও কত অসাধারণ সিরিয়াল, যেগুলি আমাদের সাহিত্য পড়ার খিদেকে উস্কে দিয়েছিল। এখনকার মতো রোজ হত না। সপ্তাহে নির্দিষ্ট একদিন। সেই অপেক্ষায় বসে থাকতাম। সেই অপেক্ষার আনন্দই ছিল আলাদা।
নতুন সিরিয়াল নির্মাণ করতে যা খরচ, পুরানো সিরিয়াল দেখাতে সেই তুলনায় কোনও খরচই নেই। যেটুকু খরচ, আশা করি বিজ্ঞাপন থেকে নিশ্চয় উঠে যাবে। যাঁরা সারাদিন সিরিয়াল দেখিয়ে বাণিজ্য করছেন, তাঁরা একবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন।