সোহম সেন
প্রায় দু’সপ্তাহ আগের কথা। রোনাল্ডোবাবু বেজায় ক্ষেপে গিয়েছিলেন। কেন বলা হচ্ছে, তিনি ক্লাব ছাড়তে পারেন।
এমনিতেই স্পেনের কাগজে এমন নানা জল্পনা ঘুরে বেড়ায়। ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড গুলিও পিছিয়ে নেই। গত পনেরো বছরে মেসিকে যে কতবার বার্সিলোনা ছাড়া করা হয়েছে, তার কোনও হিসেব নেই। রোনাল্ডোর ক্ষেত্রেও এই জল্পনা আগে বহুবার হয়েছে।
তফাত হল, মেসি এর আগে কখনও ক্লাব ছাড়েননি। অন্যান্য ক্লাবের নানা প্রলোভন সত্ত্বেও বার্সিলোনাতেই থেকে গেছেন। ফলে, সেই প্রচারের মুখ এমনিতেই বারবার ভোঁতা হয়ে গেছে। এবারও ক্লাব ছাড়তে চাননি। নিতান্ত বাধ্য হয়েই ছাড়তে হয়েছে। তাই মেসি নিয়ে জল্পনা উঠলেও সেটা তেমন বিশ্বাসযোগ্য হয় না। মেসির বিশ্বাসযোগ্যতা এতটাই যে, সেখানে কে কী জল্পনা ছড়াল, সেটা হালে পানি পায় না।
কিন্তু রোনাল্ডোর ক্ষেত্রে পরিস্থিতিটা অন্যরকম। তিনি ম্যাঞ্চেস্টার থেকে রিয়েল মাদ্রিদে এসেছেন। সেখান থেকে জুভেন্টাসেও গেছেন। ফলে, তিনি যে কোনওদিন জুভেন্টাস ছাড়তে পারেন, এতেই বা অবাক হওয়াক কী আছে? এই জল্পনার কথাই লেখা হয়েছিল বিভিন্ন ট্যাবলয়েডে। তাছাড়া, এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু সূত্র থেকে তেমন খবরও ছিল। কথাবার্তা যে অনেকদিন ধরেই চলছিল, সেটা তো সাম্প্রতিককালে রোনাল্ডোর বা তাঁর এজেন্টের কথা থেকেও পরিষ্কার।
তাহলে, রোনাল্ডো রেগে গেলেন কেন? কেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিতে গেলেন? হতেই পারে, তখনও পর্যন্ত চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি। হয়ত বিভিন্ন ক্লাবের সঙ্গে কথাবার্তা চলছিল। তাহলে মিডিয়া ভুলটা কী করল? একেবারে আষাঢ়ে গল্প তো ফাঁদেনি। হয়ত কোথাও কোথাও অতিরঞ্জন ছিল। প্রশ্নটা সেইসব ট্যাবলয়েডের মুখরোচক খবরকে ঘিরে নয়। প্রশ্নটা রোনাল্ডোর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে।
কোনও খেলোয়াড় মরশুম শেষে বা চুক্তির মেয়াদ ফুরোলে অন্য ক্লাবে যেতেই পারেন। কিন্তু মরশুমের মাঝপথে যেতে গেলে বুঝতে হবে বিষয়টা এত সহজ নয়। সাতদিন আগে যিনি জোর গলায় জানালেন, কোথাও যাচ্ছি না, জুভেন্টাস ছাড়ছি না, সাতদিন পর তিনি ঘটা করে অন্য জার্সি পরে নিলেন কীভাবে? তাহলে আগের কথাগুলোর তো কোনও মূল্যই রইল না।
কোনও সন্দেহ নেই, রোনাল্ডো অনেক বড় মাপের ফুটবলার। কিন্তু নিজের কথা রাখার দায় নিজেকেই নিতে হয়। এরপরেও রোনাল্ডোকে নিয়ে নানা জল্পনা তৈরি হবে। এবং সেগুলো বিশ্বাসযোগ্যও হবে। রোনাল্ডো হয়ত আবার রেগে যাবেন। কিন্তু সেই রাগকে কেউ পাত্তাও দেবে না। কারণ, তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা তিনি নিজেই অনেকখানি নামিয়ে ফেললেন।