রনজি ট্রফিতে কীভাবে অভিষেক হয়েছিল সৌরভ গাঙ্গুলির? কার বদলে দলে এসেছিলেন? এক জমজমাট ছবির চিত্রনাট্য হতেই পারে। সৌরভের জন্মদিনে সেই রনজি ফাইনালের কথা তুলে আনলেন জগবন্ধু চ্যাটার্জি।
প্রথম ব্যাপারটা সবসময়ই অন্যরকম। সে প্রথম প্রেম হোক, প্রথম বড় সাফল্য হোক, প্রথম পরীক্ষায় ফার্স্ট হওয়া হোক, প্রথম চাকরি হোক। সৌরভ গাঙ্গুলির জীবনে প্রথমটা বড় অদ্ভুত। প্রথম টেস্টে এসেছিল দুরন্ত শতরান। তাও আবার লর্ডসের মাঠে।
কিন্তু প্রথম রনজি ম্যাচ। এমন ঘটনা বোধ হয় ভারতীয় ক্রিকেটে আর ঘটেনি। হয়ত ঘটবেও না। প্রত্যেকেরই কোনও না কোনও ম্যাচে অভিষেক হয়। কিন্তু সৌরভের মতো এমন চমকপ্রদ অভিষেক আর কারও হয়েছে বলে জানা নেই। দিল্লির বিরুদ্ধে রনজি ট্রফির ফাইনাল। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলায় কখনও রনজি ট্রফি আসেনি। ৫১ বছর পর ইতিহাস গড়ার হাতছানি। এমন এক ম্যাচে সৌরভের অভিষেক।
একজনকে দলে ঢুকতে গেলে একজনকে বাদ যেতে হয়। মর্মাতিক হলেও, এটা ঘটনা, বাদ গিয়েছিলেন দাদা স্নেহাশিস গাঙ্গুলি। সে বছর দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন স্নেহাশিস। ঠান্ডা মাথার, লাজুক স্বভাবের এই ছেলেটিকে ততদিনে মনে ধরে গিয়েছে জাতীয় নির্বাচকদের। জাতীয় দলের দরজায় সজোরে কড়া নাড়ছেন অরুণলাল, আই বি রায়, স্নেহাশিস গাঙ্গুলি। ফাইনালে একটু বড় রানের ইনিংস হলেই ইংল্যান্ড সফরে জায়গা পাকা। ঠিক এমন সময় ফাইনালের আগের রাতে গাঙ্গুলি পরিবারে গেল সেই বার্তা। সৌরভের অভিষেক হচ্ছে দাদা স্নেহাশিসের জায়গায়। পরিবারের অবস্থাটা একবার ভাবুন। পরিবারের ছোট ছেলে সুযোগ পাচ্ছে, আনন্দে উত্তাল হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু কেউ আনন্দ করতে পারছেন না। কারণ, পরিবারের বড় ছেলেটা বাদ।
কী কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছিল সৌরভকে। কী কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছিল স্নেহাশিসকে। গাঙ্গুলি পরিবারেও কী অদ্ভুত এক দ্বিধাদ্বন্দ্ব। সৌরভের জন্মদিনে সেই অজানা অভিষেকের কথাই তুলে ধরলাম। সৌরভকে নানা পরিচয়ে অনেকে চেনেন। কিন্তু এই অভিষেকটা না জানলে হয়ত কোথাও একটা ফাঁক থেকে যাবে।