পেশাদার কাঠামোয় থাকার যোগ্যতাই নেই লাল হলুদের এই কর্তাদের

সোহম সেন

কোয়েস নাকি খুব খারাপ ছিল। তাদের সঙ্গে নাকি চলা যায় না। তারা নাকি ক্লাব সদস্য–‌সমর্থকদেক আবেগ বোঝে না। প্রায় শুরু থেকেই এরকম একটা হাওয়া তুলেছিলেন লাল হলুদ কর্তারা। কখনও প্রাক্তনদের ক্ষেপিয়ে দিচ্ছিলেন। কখনও সমর্থকদের উস্কে দিচ্ছিলেন। ফল কী হল?‌ ক্লাব থেকে কোয়েসের ছাতা সরে গেল।

কর্তারা খুব বড় মুখ করে বলে বেড়াচ্ছিলেন, একটা স্পনসর যাবে, আরও নতুন স্পনসর চলে আসবে। কিন্তু মাসের পর মাস পেরিয়ে গেল। একটা মাঝারিমানের স্পনসরও জোটাতে পারেননি ক্লাবকর্তারা। শেষমেষ মুখ্যমন্ত্রীর বদান্যতায় পাওয়া গেল শ্রী সিমেন্টসকে। কিন্তু এক বছরের আগেই এই স্পনসরের সঙ্গেও বিবাদ লেগে গেল। ক্লাবকর্তারা আবার সেই পুরনো খেলায় মেতেছেন। প্রাক্তনদের লেলিয়ে দেওয়া, সমর্থকদের উস্কে দেওয়া, মিডিয়াকে কাজে লাগানো।

east bengal

চুক্তি নিয়ে এত জটিলতা কেন?‌ যদি জটিলতা থাকেও, আলোচনার টেবিলে মেটানো যায়। অন্তত মেটানোর চেষ্টা করা যায়। কিন্তু নীতু সরকার অ্যান্ড কোং সমানে গ্যালারি শো করে যাচ্ছেন। তাঁরা আলোচনায় কতটা আন্তরিক, যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তাঁরা স্পনসরদের চিঠি লিখছেন। ভাল কথা। সেই চিঠি সব কাগজে বেরিয়ে যাচ্ছে কীভাবে?‌ আবার শ্রী সিমেন্টস যখন জানতে চাইছে চুক্তিতে কোথায় অসঙ্গতি, তখন সেই চিঠির উত্তর দিনের পর দিন ঝুলিয়ে রাখছেন। বারবার শোনাচ্ছেন, আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে চিঠির উত্তর দেওয়া হবে।

আলোচনায় বসতে চেয়ে চিঠি। তার জন্য দফায় দফায় আইনজীবীর দ্বারস্থ হতে হবে কেন?‌ বিশ্বাসের সেতুতে তো প্রথম থেকেই ফাটল ধরিয়ে দেওয়া। দুই পক্ষের আলোচনায় পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হতে পারত। পুরটো না হোক, অন্তত অর্ধেক সমস্যা মিটত। আরও এক–‌দুবার আলোচনায় বাকি জটগুলো খুলতে পারত। কিন্তু এই কর্তারা গ্যালারি শো করতেই ব্যস্ত। তাঁরা শুধু সমর্থকদের দেখাতে চাইছেন, দেখো, আমরা তোমাদের আবেগকে কত সম্মান করি।

এই কর্তাদের কাছে সমর্থকদের আবেগের যে বিশেষ কোনও মূল্য নেই, অতীতে বহুবার তা প্রমাণিত। মোদ্দা কথা, কয়েকজন কর্তার কর্তৃত্ব কিছুটা কমে যাবে। তাই সমর্থকদের ঢাল বানানোর চেষ্টা। সমর্থকরা এই সহজ সত্যিটা বুঝেও বুঝছেন না। স্পনসরকে লেখা চিঠি প্রকাশ্যে আসছে কীভাবে?‌ তাঁদের কাছে পৌঁছনোর আগেই সেই চিঠির কপি মিডিয়ায় কারা ফরোয়ার্ড করছেন?‌ তাহলে কি চিঠিটা লেখা হয়েছিল মিডিয়াকে পাঠানোর জন্যই?‌

পরপর দুই স্পনসরের সঙ্গে এমন তিক্ততা কেন তৈরি হল?‌ সদস্য–‌সমর্থকরা জবাব চাইবেন না?‌ এই স্পনসরও যদি সরে যায়, সেটা ক্লাবের পক্ষে খুব ভাল বিজ্ঞাপন হবে?‌ আগামীদিনে কোন স্পনসর এগিয়ে আসবেন?‌

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.