‌সিপিএমকে দেখে শরিকরা যদি কিছু শিখতেন!‌

সজল মুখার্জি
ব্রিগেড মানেই বামপন্থীদের কাছে অন্যরকম একটা অনুভূতি। ভোটের ফল যাই হোক, ব্রিগেডের আকর্ষণ দুর্নিবার। গতবার লোকসভায় বামেরা শূন্যে নেমে এসেছে। ভোট শতাংশ নেমে এসেছে সাতে। বিপুল এই উন্মাদনা দেখে কে বলবে!‌
আমি কেন ব্রিগেড যাই?‌ নেতাদের ভাষণ শুনতে?‌ মোটেই না। ওটা তো টিভিতেই দিব্যি শোনা যায়। টিভি যদি ব্ল্যাক আউট করে, তাও চিন্তা নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় এতরকম গ্রুপ। কোথাও না কোথাও ঠিক লাইভ হচ্ছে। ভাষণের বিভিন্ন ক্লিপিংস একটু পরেই ঠিক মোবাইলে চলে আসবে।
আসলে, ব্রিগেড যাই সেই ধুলো মাখতে। সেই লড়াইয়ের, সেই আনন্দের শরিক হতে। দূরদূরান্ত থেকে লাল ঝান্ডা হাতে কত হাজার হাজার মানুষ আসেন। তাঁদের কাছেও দিনটা যেন মুক্তির আনন্দ। এবার ব্রিগেডে একটা বড় চমক ছিলেন আব্বাস সিদ্দিকি। মঞ্চে ছিলেন কংগ্রেস নেতারাও। সেইসঙ্গে আবার ভাল লাগল একঝাঁক নতুন মুখ দেখে। তাঁদের মঞ্চে তোলা হল। ছোট ছোট বক্তৃতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হল। কেউ আবার পরের বক্তার নাম ডাকলেন। লক্ষ লক্ষ মানুষের সঙ্গে মীনাক্ষী, ঐশী, দীপ্সিতাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হল। সিপিএমের প্রার্থীতালিকা এখনও ঘোষণা হয়নি। তবে নিশ্চিতভাবেই অনেকটা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, এবার তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব অনেক বেশি থাকবে। ঐশী, দীপ্সিতাদের মঞ্চে তোলাটা যেন তারই একটা পূর্বাভাস।

brigade logo
সিপিএম যখন তরুণদের এতখানি জায়গা দিল, তখন শরিকরা শুধু বিরক্তি বাড়ালেন। সিপিআইয়ের হয়ে এখনও বক্তা সেই ডি রাজা, স্বপন ব্যানার্জি। আর এস পি–‌র মনোজ ভট্টাচার্য। আর ফরওয়ার্ড ব্লকের নরেন চট্টোপাধ্যায়। তিনজনই শ্রোতাদের বিরক্তি বাড়ালেন। মানুষের আবেগকে তাঁরা যে ছুঁতে পারছেন না, এই সহজ সত্যিটাও তাঁরা বোঝেন না। গতবার তবু কানহাইয়াকুমারকে আনার একটা উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। এবার সেই উদ্যোগ দেখা গেল না কেন?‌ সিপিআই নিজেই কি কানহাইয়াকে আনতে আগ্রহী ছিল না?‌ ফরওয়ার্ড ব্লক নরেন চ্যাটার্জির বদলে ভিটরকে বক্তা করতে পারত না?‌ নিশ্চিতভাবেই ভিক্টরের বক্তৃতা ঝড় তুলত। দল হিসেবে ফরওয়ার্ড ব্লকের ভাবমূর্তিই উজ্জ্বল হত। যে সাহসটা সিপিএম দেখাতে পারল, সেই সাহসটা যদি শরিকরা দেখাতে পারতেন!‌

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.